আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার স্ত্রী রিনিকি ভুঁইয়া শর্মার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তুলল বিরোধীরা। বেআইনি ভাবে ১০ কোটি টাকা ভর্তুকি পেয়েছে রিঙ্কি ভুঁইয়া শর্মার কোম্পানি, এমনটাই অভিযোগ বিরোধী কংগ্রেসের। কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটেও এই তথ্য রয়েছে বলে দাবি। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই জমি কেলেঙ্কারি মামলাতে ন্যায্য তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিরোধী আসাম জাতীয় পরিষদও (AJP)।
মঙ্গলবার কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ টুইটারে (বর্তমানে X) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে লেখেন, “আপনার সরকার মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার স্ত্রীর একটি বেসরকারি কোম্পানিকে ১০ কোটি টাকা সরকারি ভর্তুকি দিয়েছে। মানুষ কি এর জন্য ট্যাক্স দেয়?” এরপর বুধবার সকালে তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য কিষান সম্পদ স্কিম চালু করেছিলেন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা নিজের প্রভাব খাটিয়ে স্ত্রীর কোম্পানিকে ১০ কোটি টাকার সরকারি ভর্তুকি পাইয়ে দিয়েছেন। কেন্দ্র সরকারি প্রকল্পগুলি কি বিজেপি নেতাদের আরও ধনসম্পদ বাড়িয়ে জন্য আনা হয়েছিল?”
কংগ্রেস নেতার এই অভিযোগের পর টুইটারেই হেমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, “আমি একটা কথা স্পষ্ট করে দিতে চাই। আমার স্ত্রী বা তাঁর কোম্পানি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সরকারি আর্থিক ভর্তুকি পায়নি।”
এর পর গগৈ কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইটের লিঙ্ক প্রকাশ করে টুইটারে লেখেন, ‘‘খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে স্পষ্ট ভাবে ব্যক্তিটির নাম এবং তাঁর কোম্পানির নাম উল্লেখ রয়েছে। ১০ কোটি সরকারি অনুদান অনুমোদনের কথাও জানানো হয়েছে। ওয়েবসাইটটি হ্যাক হয়ে থাকলে দয়া করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে রিপোর্ট করুন।’’
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার স্ত্রী রিনিকি ভুঁইয়া শর্মার কোম্পানি প্রাইড ইস্ট এন্টারটেইনমেন্ট মিডিয়া গ্রুপ আসামের নওগাঁও জেলার কালিয়াবোর দার্গাজি গ্রামে ৫০ বিঘা ২ কাঠা সরকারি কৃষি জমি কিনেছিল। এবার ওই কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে সেটিকে শিল্পাঞ্চল দেখিয়ে সেখানে একটি ফুড প্রসেসিং ফার্ম খোলার জন্য কেন্দ্র সরকারের প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্পদ যোজনার আওতায় ১০ কোটি টাকা সরকারি ভর্তুকি নিয়েছেন রিনিকি ভুঁইয়া, অভিযোগ কংগ্রেসের।
প্রসঙ্গত, রিনিকি ভুঁইয়া শর্মার কোম্পানি প্রাইড ইস্ট এন্টারটেইনমেন্টের বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চেয়ারপার্সন পদে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী। কোম্পানিটি একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি সংবাদ ও এন্টারটেইনমেন্ট চ্যানেল, সংবাদপত্র, স্কুল, হোটেল-রিসর্ট, চা-বাগান-সহ অনেকগুলি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন