দীর্ঘ ২২ বছরের যুদ্ধ শেষ। অবশেষে ভারতবাসী হওয়ার তকমা ছিনিয়ে নিলেন আসামের কাছাড় জেলার আকোল রানি। ছেলের আত্মহত্যার পরও তিনি থেমে থাকেননি। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে ভারতবাসী স্বীকৃতি পেলেন অশীতিপর বৃদ্ধা।
বুধবার শিলচরের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের তরফ থেকে জানানো হয় আকোল রানি নমশুদ্র ভারতবাসী, তিনি বিদেশী নন। এই রায় অর্জুন নমশুদ্রর আত্মহত্যার ন্যায়বিচার বলে জানাচ্ছে পরিবার। ২০১২ সালে আকোল রানি নমশুদ্রের ছেলে অর্জুন নমশুদ্র নাগরিকত্বের প্রমাণ নিয়ে হতাশায় ভুগে আত্মহত্যা করেছিলেন। তবু বৃদ্ধা থেমে থাকেননি। ২০১৫ সালেও তিনি যে ভারতীয় তার প্রমাণ দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয় ২০০০ সালে। কোনও এক পুলিশ কর্মী বাংলাদেশী ভেবে ঐ পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেই মামলার ভিত্তিতেই আকোল রানি এবং তাঁর দুই ছেলে মেয়ে অঞ্জলি আর অর্জুনকে ডেকে পাঠায় ট্রাইব্যুনাল। আকোল রানির প্রশ্ন - তিনি ১৯৬৫ সাল থেকে ভোট দিয়ে আসছেন, তাহলে কী করে তিনি বিদেশী হন?
সমস্ত নথি যাচাই করতে থাকে ট্রাইব্যুনাল। পরিবারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, তাঁদের এই আইনি লড়াইয়ে স্থানীয় আইনজীবীরা বড়ো ভূমিকা পালন করেছেন। ঐ আইনজীবীরা বিনা পারিশ্রমিকে নমশুদ্র পরিবারের ভারতীয় হওয়ার প্রমাণপত্র ট্রাইব্যুনালে জমা দেন।
অবশেষে সবকিছু বিচার করে ট্রাইব্যুনাল আকোল রানিকে ভারতীয় নাগরিকের স্বীকৃতি প্রদান করে। আকোল রানি নমশুদ্র অবশ্য হতাশ হয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা ভারতীয়ই ছিলেন, তাও কেন বিদেশী তকমা দেওয়া হল?
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, ২০১৪ তে লোকসভা নির্বাচনে আসামে প্রচারে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর মুখে এই পরিবারের কথা শোনা যায়। তিনি তৎকালীন কংগ্রেস সরকারকে এর জন্য কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। তাঁকে বলতে শোনা যায় ডিটেনশন ক্যাম্পের নামে কংগ্রেস মানবাধিকারকে অগ্রাহ্য করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন