আসামে বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশনেই আনা হবে ‘গো সুরক্ষা বিল’। যা আইন হিসেবে বলবত করা হবে। হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন আসামের বিজেপি সরকার এই আইন আনতে চলেছে। গতকালই বিধানসভার প্রথম অধিবেশনে রাজ্যপাল জগদীশ মুখি একথা জানিয়েছেন। প্রস্তাবিত এই আইন অনুসারে, আসাম থেকে বাইরে কোনো গোরু নিয়ে যাওয়া যাবেনা। এই বিষয়ে সরকার কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
গতকাল বিধানসভার অধিবেশনে রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে বলেন – আমরা সকলেই গোরুকে শ্রদ্ধা করি এবং গোরুর পুজো ক্রি। গোরু দুধ দিয়ে আমাদের লালন পালন করে বলে পবিত্র প্রাণী হিসেবে বিবেচিত হয়। পৃথিবীর প্রতি ঐশ্বরিক দান গোরু। আমাদের সরকার আগামী অধিবেশনে গোরু সুরক্ষা বিল আনবার পরিকল্পনা করেছে। প্রস্তাবিত এই বিলে রাজ্যের বাইরে গবাদি পশু পরিবহণে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। এই বিষয়ে সরকার শূন্য সহনশীলতা নীতি নিয়ে চলবে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিল পাস হলে অন্যান্য যেসব রাজ্যে এই বিল পাস হয়েছে আসামও তাদের সঙ্গে যুক্ত হবে।
প্রসঙ্গত, আসাম বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিরোধীদের পক্ষ থেকে সরকারের দিকে গোরু পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছিলো। এক নির্বাচনী প্রচারে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল জানিয়েছিলেন – ২০১৬ সালে আসামে বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর বাংলাদেশে গোরু পাচার এবং মাংস রপ্তানী বেড়েছে প্রায় ২১১ শতাংশ। তিনি আরও অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে – রাজ্যের বিজেপি সরকার শুধু গোরু পাচার নয়, কয়লা, বাঁশ, পান, মাছের অবৈধ চোরাকারবারের সঙ্গে যুক্ত।
গত ২৬ জুলাই ২০১৯ রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো দেশের পাঁচ রাজ্যে গো রক্ষা সংক্রান্ত কোনো আইন বলবত নেই। এই পাঁচ রাজ্য হল কেরালা, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘাল্য, মিজোরাম এবং নাগাল্যান্ড। এছাড়া লাক্ষাদ্বীপেও এই সংক্রান্ত কোনো নির্দিষ্ট আইন বলবত নেই। আসামে ১০ বছরের বেশি বয়সী গোরু এবং পশ্চিমবঙ্গে ১৪ বছরের বেশি বয়সী গোরু ব্যবহারের অনুমতি আছে। এছাড়াও একাধিক রাজ্যে গোরু ব্যবহারের জন্য ‘ফিট ফর স্লটার’ সার্টিফিকেট লাগে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন