আজ ও কাল ব্যাঙ্ক ধর্মঘট। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে এই ধর্মঘট ডেকেছে ইউনাইটেড ফোরাম ফর ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন। ব্যাঙ্ক ধর্মঘটে AIBEA, AIBOC, NCBE, AIBOA, BEFI, INBEF, INBOC সহ ৯টি ব্যাঙ্ক কর্মী সংগঠন এই ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেছে । সরকারি ব্যাঙ্কের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাঙ্ক পরিষেবাও এই ২ দিন বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে ATM পরিষেবাও। কেবলমাত্র হাসপাতাল সংলগ্ন ATM পরিষেবা চালু থাকবে।
গত বুধবারও সরকারের সঙ্গে বৈঠক বসেছিল ব্যাঙ্ক কর্মী সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু সেখানে কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে না আসায় ধর্মঘটের কথা ঘোষণা করে ইউনাইটেড ফোরাম ফর ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রায় ৯ লক্ষ কর্মচারী আজ ও কাজ এই ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেছেন। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কর্মচারীদের ধর্মঘটে না যাওয়ার অনুরোধ করলেও সেই আবেদনে কর্ণপাত করেননি কর্মচারীরা।
পরপর ২ দিন ধর্মঘট থাকায় স্বাভাবিকভাবেই বেকায়দায় পড়েছেন গ্রাহকরা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ধর্মঘটের কারণে আগামী দুদিন দেশে আর্থিক লেনদেন বড় রকমের প্রভাব পড়বে। তবে ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু থাকবে।
ফোরাম জানাচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের টাকা জনগণের। সেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের অর্থ কর্পোরেটদের হাতে জনগণের টাকা তুলে দেওয়া। এভাবে দেশে বড় বড় কর্পোরেট ঋণখেলাপীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ব্যাঙ্ক। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের অভিযোগ, মোদি জমানায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের খাতা থেকে প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ ঋণ মুছে দেওয়া হয়েছে। কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত বলেন, “যে সব বেসরকারি সংস্থা ঋণ শোধ না করার ফলে রাজকোষের ক্ষতি হচ্ছে, কেন্দ্র তাদের হাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলিকে তুলে দিতে চাইছে।”
প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ এবং ১৯৮০ সালে দুই দফায় মোট ৩৪টি ব্যাঙ্কের রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হয়। মূলত বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত ব্যাঙ্কে সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের অর্থ লোপাট হওয়া ও ব্যাঙ্ক রক্ষায় রাষ্ট্রায়ত্তকরণের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এবারের শীতকালীন অধিবেশনে ‘ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ বিল’ আনতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। ১৯৭০ ও ১৯৮০ সালের ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের দু’টি আইন এবং ১৯৪৯-এর ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা হবে বলে জানা গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন