ডিসেম্বর থেকেই কর্ণাটকের স্কুল-কলেজে পড়ানো হবে ভগবদ গীতা। বিজেপি শাসিত সরকারের এহেন ঘোষণা ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
সোমবার, বিধানসভায় কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশ জানান, ‘পবিত্র হিন্দু ধর্মগ্রন্থের শিক্ষাগুলি 'নৈতিক শিক্ষা' পাঠ্যক্রমে পড়ানো হবে।’ তবে, ‘চলতি সিলেবাসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের 'ভগবত গীতা' পড়ানো নিয়ে সরকারের কাছে কোনো প্রস্তাব নেই’ বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক নিরঞ্জন আরাধ্য ভিপি সংবাদ সংস্থা IANS-কে জানিয়েছেন, সিলেবাস কমিটির রিপোর্ট আসার আগেই এই ঘোষণা আসলে ‘অপরিণত’ এবং ‘হঠকারি’ সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, ‘এটি সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত। এটি শিক্ষার্থীদের সাহায্য করবে কি না, তা ভিন্ন বিষয়। ত্রৈমাসিক শিক্ষাবর্ষে, শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সিলেবাস তৈরি হবে। করার হলে তখন প্রতিটি ধর্মের নীতিগুলি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’
এরপরে প্রশ্ন তুলে নিরঞ্জন আরাধ্য আরও বলেন, ‘কমিটি গঠন ও সুপারিশ আসার পর, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু, কোনো কমিটি গঠন না করেই কি করে ডিসেম্বর থেকে ভগবদ্গীতা পড়ানো হবে বলে মন্ত্রী ঘোষণা করলেন?’
স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের ভগবত গীতা পড়ানো নিয়ে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করেছেন বিজেপির MLC-রা। বিধান পরিষদে অধিবেশন চলাকালীন, এম কে প্রাণেশ ও এম রবি কুমার নামে দুজন MLC শিক্ষা ক্ষেত্রে ভগবত গীতা চালু করার দাবি তোলেন।
বিজেপি MLC প্রাণেশ প্রশ্ন তোলেন, ‘সরকার বলছে বর্তমান সিলেবাসে কর্ণাটকের ছাত্রদের ভগবত গীতার শিক্ষা চালু করার কোনও প্রস্তাব নেই। যখন গীতা পড়ানো নিয়ে কোনও বিরোধিতা নেই, তখন সরকার কেন এটার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে দ্বিধা করছে? সরকার আগ্রহ দেখিয়েছে কি?’
এর পরেই, শিক্ষামন্ত্রী নাগেশ বলেন, ‘চলতি বছর বর্তমান পাঠ্যক্রমের সঙ্গে ভগবত গীতা পড়ানোর কোনও প্রস্তাব নেই। কিন্তু, ভগবত গীতাকে ‘নৈতিক বিজ্ঞান’ বিষয়ের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, ডিসেম্বর থেকে ভগবত গীতা পড়ানো হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্কুল পাঠ্যসূচিতে ঐতিহাসিক কিছু ঘটনা নিয়ে কিছু ভুল সংশোধন করা হয়েছে এবং আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’
এর আগে মন্ত্রী নাগেশ বলেছিলেন, ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP) অনুসারে, গুজরাটের মতো এরাজ্যেও শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শের পরে ভগবত গীতা চালু করা হবে।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন