ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল নিয়ে প্রকাশ্য বিরোধিতার পথে হাঁটলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা কপিল সিবল। শনিবার টুইটারে মোদী সরকারকে তুলোধোনা করে দেশের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী কপিল সিবল লিখেছেন, “ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফলের স্বার্থে পুলিশকে কঠোর ক্ষমতা ব্যবহারের অনুমতি দেয়।"
নিজের ট্যুইটে রাজ্যসভার সাংসদ সিবল আরও লেখেন, "BNS বিল পুলিশী হেফাজত ১৫ দিন থেকে বাড়িয়ে ৬০-৯০ দিন পর্যন্ত সময়সীমার অনুমতি দেয়। রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে হুমকি প্রদানকারী ব্যক্তিদের বিচারের জন্যই এই নতুন আইন। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নয়া আইন বিরোধীদের চুপ করানোর জন্য ছাড়া কিছুই নয়।”
ব্রিটিশ আমলের ঔপনিবেশিক আইনে বড়সড় বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ভারতীয় আইন ব্যবস্থায় তিনটি ফৌজদারি আইনে বদল আনতে শুক্রবার লোকসভায় নয়া ৩টি বিল পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
ভারতীয় দণ্ডবিধি (IPC)-র আওতায় ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড (CrPC) এবং ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট - আইনগুলির পরিবর্তে নয়া তিন বিল পেশ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল, ২০২৩ বিলও। আর এই বিল নিয়েই শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের চূড়ান্ত বিরোধিতা করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিবল।
ভারতের বহু পুরনো আইনব্যবস্থায় বদল আনতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে সংসদে শুক্রবার তিনটি নয়া বিল পেশ করেন। তার মধ্যে প্রথম হল ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) বিল, ২০২৩। এছাড়াও CrPC বা ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড-এ বদলে পেশ করা হয়েছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS) বিল, ২০২৩ এবং ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট-এর পরিবর্তে পেশ করা হয়েছে ভারতীয় সাক্ষ্য (BS) বিল, ২০২৩। পাশাপাশি, ভারতের আইনব্যবস্থা থেকে ‘দেশদ্রোহ আইন’ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করে নেওয়ারও প্রস্তাব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিলে ভারতীয় দন্ডবিধির-এর ২২টি ধারা বাতিল করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও ১৭৫টি বর্তমান ধারার পরিবর্তনের প্রস্তাবের পাশাপাশি 8টি নতুন ধারা প্রবর্তন করেছে৷
ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতায় CrPC-র ৯টি বিধান বাতিল করে এর ১৬০টি বিধানে পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং ৯টি নতুন বিধান যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এতে মোট ৫৩৩টি ধারা আছে।
ভারতীয় সাক্ষ্য বিল-এর ক্ষেত্রে বর্তমান ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট-এর ৫টি বিধান বাতিল করে এবং ২৩ বিধানে পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১টি নতুন বিধান প্রবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ১৭০টি ধারা আছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন