নীতিশ কুমারের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে তোপ দাগলেন বিজেপির বিহার রাজ্যের সভাপতি সঞ্জয় জয়সোয়াল। সম্প্রতি মদ নিষিদ্ধ রাজ্যের নালন্দায় বিষ মদ পান করে ১১ জনের মৃত্যুর পর এদিন তিনি এক ফেসবুক পোস্টে তাঁর ক্ষোভ উগরে দেন। জয়সোয়াল তাঁর ফেসবুক পোস্টে বলেন, উচ্চতর প্রশাসনিক আধিকারিক এবং পুলিশ আধিকারিকরা রাজ্যে বেআইনি মদ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তিনি দোষীদের গ্রেপ্তারির দাবিও জানিয়েছেন।
গত ১২ জানুয়ারি জেডি(ইউ) মুখপাত্র অভিষেক ঝা প্রকাশ্যে বিজেপির সঞ্জয় জয়সোয়ালের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। ওইদিন অভিষেক বলেন, আমি সঞ্জয় জয়সোয়ালের কাছে জানতে চাই এটা কি তাঁর ব্যক্তিগত মত নাকি তাঁর দলগত মত? এর আগে সঞ্জয় জয়সোয়ালের বিহারে মদ নিষিদ্ধ থাকার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এনডিএ জোটসঙ্গী দুই দলের প্রকাশ্য এই কথা চালাচালিতে রাজ্যের এনডিএ সরকারের ওপর ভরসা হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।
অভিষেক ঝা-এর ট্যুইটের জবাবে সঞ্জয় বলেন, আমি বিষমদ পানে মৃতদের পরিবারের কাছে যাবো এবং তাঁদের সমবেদনা জানাবো। তাঁদের কাছে যাওয়া কি কোনো অপরাধ? নীতিশ কুমার সরকার কি যারা মারা গেছেন তাঁদের পরিবারকে জেলে পাঠাচ্ছেন?
জয়সোয়াল আরও বলেন, যদি সত্যি করেই নালন্দাতে মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হয় তাহলে সেই সব আধিকারিককে গ্রেপ্তার করা উচিত যারা মানুষের সামনে ভুল বিবৃতি দেয়। সবাই জানে এরা বিষাক্ত মদ পান করে মারা গেছেন, আর নালন্দার জেলাশাসক শশাঙ্ক শুভঙ্কর এবং অন্যান্য আধিকারিকরা বলছেন, এদের মৃত্যুর কারণ অন্য। এদের কারোর ডায়েবিটিস ছিলো, কারোর ব্লাড প্রেসার ছিলো। এই ধরণের মন্তব্য থেকেই মদ মাফিয়াদের সঙ্গে এই সব আধিকারিকদের সম্পর্ক কতটা গভীর তা বোঝা যায়।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ অফিসাররাও এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। কীভাবে কোথায় মদ বিক্রি হয় এরা সব জানেন। এদের সকলকে বিহারের লিকার প্রোহিবিশন আইন অনুসারে ১০ বছর করে কারাদন্ড দেওয়া উচিত।
বিজেপি নেতা বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ধরণের ঘটনায় ইন্সপেক্টর র্যাঙ্কের নীচে থাকা পুলিশ আধিকারিকদের মাত্র দু’মাস করে সাসপেনশন দেওয়া হয় এবং তাঁদের অন্য পুলিশ থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই ধরণের নরম সিদ্ধান্তের ফলে তাঁরা তাঁদের অপরাধমূলক কাজ চালিয়েই যান।
সঞ্জয়ের অভিযোগ, এরপরে আছে মদ মাফিয়ারা। এদের গ্রেপ্তার করা খুবই সহজ। যদি পুলিশ আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাহলেই এদের গ্রেপ্তার করা যায়। মদ প্রস্তুতকারক এবং মদ্য পানকারী – দু জনকেই গ্রেপ্তার করা উচিত। যদি এই পরিস্থিতি বন্ধ করতে হয় তাহলে প্রশাসনিক আধিকারিক, পুলিশ এবং মদ মাফিয়াদের অশুভ আঁতাত বন্ধ করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন