রাজ্যে এনডিএ সরকারের জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজছে। বিহারের দুটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে একটিতেও জয়ী না হওয়া সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) একথা জানিয়েছে। দলের এক নেতা বলেন, আরজেডি বিগত কয়েক বছরে এবারই প্রথম কুশেশ্বর আস্থান এবং তারাপুর উপনির্বাচনে একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। উপনির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব।
আরজেডি নেতা জানান, "১৯৯০ সালে লালু প্রসাদ জাতীয় নেতা হিসাবে উঠে আসার পর থেকে আরজেডি-কংগ্রেসের দীর্ঘদিন জোট আছে। তিনি কংগ্রেসের সাথে জোটবদ্ধ হয়েই সমস্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ২০১০ সালে একবার RJD কংগ্রেসের সাথে জোট ভেঙেছিল লোক জনশক্তি পার্টির (এলজেপি) সাথে জোট করে নির্বাচনে লড়েছিলো।"
আরজেডি কখনও কুশেশ্বর আস্থান থেকে নির্বাচনে লড়েনি। বরাবরই কংগ্রেসকে এই আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২০১০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই আসন দেওয়া হয়েছিলো এলজেপিকে। তা সত্ত্বেও, এবার আরজেডি প্রার্থী মাত্র ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে এই আসনে হেরেছে। কিন্তু ২০২০ নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী যে শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন এবার আরজেডি প্রার্থীর ভোট শতাংশ তার থেকে বেশি। এবার আরজেডি প্রার্থীর ভোট শতাংশ ৩৬ শতাংশ।
তারাপুরে, আরজেডি প্রার্থী অরুণ শাহ জনতা দল-ইউনাইটেড প্রার্থী রাজীব কুমার সিংয়ের কাছে ৩,৮০০ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। ২০২০ সালে, RJD প্রার্থী দিব্যা জ্যোতি এবং JD-U প্রার্থী মেওয়ালাল চৌধুরীর মধ্যে পরাজয়ের ব্যবধান ছিল 7,200 ভোট। গতবার আরজেডি প্রার্থী ৩২.৮% শতাংশ ভোট পেয়েছিলো, যেখানে এবার তা হয়েছে ৪৪.৩৫ শতাংশ। RJD তার ঐতিহ্যবাহী মুসলিম-যাদব (MY) ভোটব্যাঙ্ক ছাড়াও অন্যান্য অংশের মধ্যে রাজনৈতিক ভিত্তি লাভ করেছে।
কুশেশ্বর আস্থান কেন্দ্রে আরজেডি সমস্ত সম্প্রদায়ের ৩৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে, যেখানে মুসলিম জাদব ভোট মাত্র ২৫ শতাংশ। একইভাবে তারাপুরে, নির্বাচনী এলাকার মুসলিম যাদব ভোটারের ২৬ শতাংশের অনুপাতে আরজেডি ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
তেজস্বী যাদবের কংগ্রেস থেকে দলকে আলাদা করার সিদ্ধান্তের ফলে আগামী দিনে এলজেপি-রাম বিলাস বা মুকেশ সাহানীর ভিআইপির মতো অন্যান্য শক্তির সঙ্গে রাজ্যে জোটের রাস্তা খুলে যেতে পারে বলেও অনুমান রাজনৈতিক মহলের।
২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, RJD কংগ্রেসের চাপের মুখে ৭০ আসন ছেড়ে দিয়েছিল। যদিও ওইসময় আরজেডি 50টি আসন ছাড়তেও প্রস্তুত ছিল না।
দলের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, কংগ্রেসের মুসলিম ভোটের আশ্বাসে ওই সময় কংগ্রেসকে বেশি সংখ্যক আসন ছেড়েছিলো আরজেডি। তেজস্বী যাদব মুকেশ সাহানির ভিআইপিকে কিছু বেশি আসন দিতে চাইলেও কংগ্রেসকে বেশি আসন ছাড়ায় ওইসময় ভিআইপি জোট ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
২০২১ সালের উপনির্বাচনে, মুসলিম সম্প্রদায় আবারও কংগ্রেসকে ত্যাগ করে এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা পরাজিত হয়। এমনকি জামানতও বাঁচাতে পারেনি।
তেজস্বী যাদব আগামী দিনে এলজেপি-রাম বিলাসের মতো অন্য বিকল্প দলের সঙ্গে জোটের চেষ্টা চালাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি চিরাগ পাসোয়ানের সাথে হাত মেলানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন। বিহারের অনগ্রসর শ্রেণীর মধ্যে এলজেপি-র একটি ঐতিহ্যগত ভোটব্যাঙ্ক আছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন