সাম্প্রতিক রাজনীতিতে এতদিন বিজেপির ‘অপারেশন লোটাস’-এর আঁচ থেকে বাঁচতে কংগ্রেস সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের বিধায়কদের অন্য রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যাবার রেওয়াজ চালু হয়েছিল। এবার বিহার বিধানসভায় আস্থা ভোটের আগে দলীয় ৭৮ বিধায়ককেই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। জানা গেছে বুদ্ধগয়ায় ৭৮ জন বিজেপি বিধায়ককে একসঙ্গে রাখা হবে।
পাটনায় বিহারের বর্তমান উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরীর বাড়িতে এই বিষয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব দলীয় সমস্ত বিধায়ককে বুদ্ধগয়ায় এক জায়গায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করছেন যে ১০ এবং ১১ ফেব্রুয়ারি বুদ্ধগয়াতে দলের দুই দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি রয়েছে এবং তাই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে রাজনৈতিক পরামর্শ নিতে সেখানে সমস্ত বিধায়ক উপস্থিত থাকবেন।
বিজেপি বিহার ইউনিটের মুখপাত্র অরবিন্দ কুমার সিং এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, “দল বুদ্ধগয়ায় একটি প্রশিক্ষণ শিবির আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের বিধায়করা সেখানে দুই দিন থাকবেন এবং আস্থা ভোটে অংশ নিতে ১২ ফেব্রুয়ারি পাটনায় ফিরে আসবেন। আমাদের পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে এবং আমরা তা বিধানসভায় প্রমাণ করব। ১২ ফেব্রুয়ারি বিহারে কোনও 'খেলা' হবে না।”
বিজেপি জানিয়েছে, এটি দলের একটি কর্মসূচী। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে এই কর্মসূচীর সময় নির্বাচন এমন কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ১২ ফেব্রুয়ারি গুরুত্বপূর্ণ আস্থা ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরের নেতারা কোনও ঝুঁকি নিতে চান না। বোধগয়ার প্রশিক্ষণ শিবির কোনও পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচী নয়। বুধবার রাতে হঠাৎ এই শিবিরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে যে বিজেপি বিধায়করা যদি পাটনায় থাকেন তবে তাদের মধ্যে কিছু এখানে-সেখানে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে এবং তাই দল তাদের এক জায়গায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিধায়করা ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে পাটনায় ফিরে আসবেন এবং আস্থা ভোটে অংশ নিতে সরাসরি বিধানসভায় যাবেন।
বিধানসভার বাজেট অধিবেশন রাজ্যপাল রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ আরলেকারের বক্তৃতার মধ্য দিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর এনডিএ নেতারা স্পিকার অবধ বিহারী চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবে। নতুন স্পিকার নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ করার পর নীতীশ কুমার সরকার বিধানসভায় তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবে।
যেহেতু স্পিকার অবধ বিহারী চৌধুরী পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেছেন, তাই ১২ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় কী ধরনের 'খেলা' হবে তা নিয়ে সব মহলেই উৎকণ্ঠা আছে।
সূত্র অনুসারে, বিজেপির কিছু বিধায়ক এবং জেডি-ইউ-এর প্রায় ৬ জন বিধায়ক আরজেডি নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন