বিহারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী মদন সাহানী পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করার পর রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। গতকালই রাজ্যের মন্ত্রী নীতিশ কুমার সরকারের সমালোচনা করে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই বিরোধী আরজেডি শিবির থেকে আক্রমণ ধেয়ে এসেছে ক্ষমতাসীন এনডিএ শিবিরের দিকে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে আরজেডি নেতা মৃত্যুঞ্জয় তেওয়ারী সাংবাদিকদের জানান, নীতিশ কুমারের ডবল ইঞ্জিন সরকার এখন প্রবল অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ভুগছে। এনডিএ সরকারের নৌকা এখন নড়বড় করছে এবং যে কোনো সময় ডুবে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী মদন সাহানী আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। নীতিশ সরকারের বহু মন্ত্রীই একই অবস্থায় আছেন। আমলারা তাঁদের ইচ্ছামত সরকার চালাচ্ছে এবং মন্ত্রীদের কথা শুনছে না।
তিওয়ারী জানান, আমাদের নেতা তেজস্বী যাদব বহুদিন আগে থেকেই যেকথা বলে আসছেন গতকালই সাহানী পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করায় তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়াও বিজেপি বিধায়ক জ্ঞানেন্দ্র সিং জ্ঞানু জানিয়েছেন বিহার সরকারের মন্ত্রীরা সরকারি আধিকারিকদের বিভিন্ন দপ্তরে বদলি করতে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিচ্ছেন। আমরা বিশ্বাস করি, যেভাবে মদন সাহানীদের মত মন্ত্রীরা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করছেন তাতে নীতিশ কুমার সরকার খুব শীঘ্রই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে। সেক্ষেত্রে নীতিশ কুমারের সরকার পড়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, গতকালই বিহারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী মদন সাহানী তাঁর দপ্তরের মুখ্য সচিব অতুল প্রসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মন্ত্রীসভা থেকে ইস্তফা দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এই প্রসঙ্গে মদন সাহানী জানিয়েছিলেন, গত চার বছর ধরে অতুল প্রসাদ এই দপ্তরের মুখ্যসচিবের পদে বসে আছেন এবং পুরো দপ্তরকে তিনি ধ্বংস করে দিচ্ছেন। তিনি ট্রান্সফার পোস্টিং সহ বিভিন্ন বিষয়ে আমার বিভিন্ন পরামর্শ সরাসরি অস্বীকার করছেন। এই দপ্তর আমলারাই চালাচ্ছে এবং আমার কাছে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা খোলা নেই। এর আগেও অতুল প্রসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
যদিও জানা যাচ্ছে, মন্ত্রী মদন সাহানীর সঙ্গে সচিব অতুল প্রসাদের বিবাদের মূল কারণ ট্রান্সফার পোস্টিং। মন্ত্রী চাইছেন তাঁর পছন্দ অনুসারে বিভিন্ন আধিকারিককে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করতে। যদিও বিহার সরকারের নিয়ম অনুসারে, কোনো আধিকারিক কমপক্ষে তিন বছর এক দপ্তরে পূর্ণ না করলে তাঁর বদলি হওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সাহানী যাদের বদলি চাইছেন তাঁরা অনেকেই এক দপ্তরে তিন বছর পূর্ণ করেননি। ফলত মন্ত্রীর দাবি অস্বীকার করেছেন দপ্তরের মুখ্য সচিব।
- with IANS input
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন