নীতিশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর মুখপাত্র পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কে সি ত্যাগী। কেন্দ্রের বর্তমান শাসকজোট এনডিএ-র জোটসঙ্গী জে ডি ইউ-এর এই বিশিষ্ট নেতার পদত্যাগে সরগরম বিহারের রাজনৈতিক মহল। রবিবার তিনি নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ‘ব্যক্তিগত’ কারণে এই ইস্তফা বলে জানিয়েছেন কে সি ত্যাগী।
দলের প্রভাবশালী এই নেতার ইস্তফার পর এক বিবৃতিতে জেডিইউ জানিয়েছে, দলের সভাপতি এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার রাজীব রঞ্জন প্রসাদকে দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, সমাজবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী কে সি ত্যাগী সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় স্তরে বেশ গুরুত্ব পাচ্ছিলেন। বিশেষ করে বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর অবস্থান অনেক সময়েই বিজেপি এবং জেডিইউ-এর অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছিল। বিশেষ করে ইউনিফর্ম সিভিল কোড, ওয়াকফ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল অথবা প্যালেস্টাইন প্রসঙ্গে সরকারের ভূমিকা নিয়ে তিনি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছিলেন। যা বিব্রত করেছিল জেডিইউ এবং বিজেপিকে।
অন্য একটি মহলের মতে, বিজেপির সঙ্গে জেডিইউ নতুন করে জোট বাঁধাকে মেনে নিতে পারেননি কে সি ত্যাগী এবং তিনি এই বিষয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন। বিশেষ করে বর্তমানে জেডিইউ-এর যেসব নেতারা নীতিশ কুমারকে ঘিরে থাকেন তাঁদের সঙ্গেও কে সি ত্যাগীর সম্পর্ক মধুর নয়।
জেডিইউ-এর বেশ কিছু নেতার মতে, দলের সঙ্গে আলোচনা না করেই বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য পেশ করছিলেন দলের মুখপাত্র কে সি ত্যাগী। যা অনেকক্ষেত্রেই তাঁর ব্যক্তিগত মতামত, দলীয় মত নয়। ফলে দলের মুখপাত্রের মন্তব্য নিয়ে দলের এবং জোটের ভেতর বিতর্ক তৈরি হচ্ছিল।
যদিও ইস্তফা দেবার পর কে সি ত্যাগী জানিয়েছেন, আমার ইস্তফা থেকে বিশেষ কিছু ভাববার কারণ নেই। আমি নীতিশ কুমারের সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর আগেও গত কয়েকমাস ধরেই আমি এই পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলাম। আমি টিভি বিতর্কেও অংশ নিতে চাইনি। কারণ আমার অন্যান্য কাজের জন্য আমি দলের মুখপাত্রের পদ ঠিকমত সামলাতে পারছিলাম না। তাই আমি এই পদ থেকে সরে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলাম।
এর পাশাপাশি কে সি ত্যাগী জানান, ১৯৮৪ সালে তিনি প্রথমবার নির্বাচনে জয়ী হন এবং এর পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিং-এর বার্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বভার সামলেছেন। তিনি আরও বলেন, আমি বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সমাজবাদী নেতা কর্পূরী ঠাকুরের মত মানুষের সঙ্গে থেকে কাজ করতে ভালোবাসি এবং সেটাই করতে চাই।
এর আগে ২০২৩ সালের মার্চ মাসেও কে সি ত্যাগীকে দলীয় মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদিও এর মাস দুয়ের মধ্যেই নীতিশ কুমারের হস্তক্ষেপে তিনি ফের দলীয় মুখপাত্রের পদ ফিরে পান।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন