রবিবারের পর সোমবার। পরপর দু’দিন জোটসঙ্গীর কড়া আক্রমণের মুখে বিজেপি। বিহারে এনডিএ জোটসঙ্গী হিন্দুস্থানী আওয়ামী মোর্চা (HAM) প্রধান তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঝি যেভাবে পরপর দু’দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন তাতে দৃশ্যত অস্বস্তিতে জেডি(ইউ) থেকে বিজেপি সকলেই। যে ঘটনার অন্যরকম সম্ভাবনার ইঙ্গিত খুঁজছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিন সকালে করা এক ট্যুইটে জিতন রাম মাঝি লেখেন – ‘ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেটে যদি ছবি লাগানোর এতই শখ থাকে তাহলে, করোনায় মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেটেও ছবি লাগানো হোক। এটাই ন্যায্য দাবি হওয়া উচিৎ।’ তাঁর এই ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী নাম উল্লেখ না করলেও তাঁর ট্যুইটের উদ্দেশ্য বুঝতে কারোরই অসুবিধে হয়নি। মুহূর্তে সেই ট্যুইট লাইক করেন ২.৯ হাজার জন, ৯২১টি রিট্যুইট হয় এবং ২৩২ জন মন্তব্য করেন। যদিও কিছুক্ষণ পরে এই ট্যুইট মুছে দেন জিতন রাম মাঝি। যদিও ততক্ষণে বিতর্ক যা শুরু হবার তা শুরু হয়ে গেছে।
এর আগে গতকাল করোনার দ্বিতীয় ডোজ নেবার পর এক ট্যুইট বার্তায় প্রথম আক্রমণ হানেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ জিতন রাম মাঝি। যে ট্যুইটে মাঝি বলেন – কোভ্যাকসিন-এর দ্বিতীয় ডোজ নেবার পর আমাকে এক সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর ছবি। দেশের সাংবিধানিক কাঠামোর প্রধান রাষ্ট্রপতি। তাই এখানে রাষ্ট্রপতির ছবি লাগানো উচিৎ ছিলো। আর যদি ছবি লাগাতেই হয় তাহলে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, জিতন রাম মাঝি বর্তমানে এনডিএ জোটে থাকলেও তাঁর সঙ্গে লালুপ্রসাদ যাদবের ঘনিষ্ঠতা কারোরই অজানা নয়। জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাবার পর রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছেন লালুপ্রসাদ। সেক্ষেত্রে সুতোর ওপর ঝুলে থাকা সংখ্যাগরিষ্ঠতার এনডিএ সরকার আগামী দিনে জিতন রাম মাঝির দলকে নিয়ে বিপাকে পড়তে পারে। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ৭ আসনে লড়াই করে হ্যাম জিতেছিলো ৪ আসনে।
বিহারের শেষ বিধানসভা নির্বাচনে ২৪৩ আসনের মধ্যে এনডিএ জোট পেয়েছিলো ১২৫ আসন। যার মধ্যে বিজেপি ৭৪, জেডি(ইউ) ৪৩, হ্যাম এবং ভিআইপি ৪টি করে আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১২২ আসন। সেখানে বিজেপি এবং জেডি(ইউ)-র আসন যোগ করলে দাঁড়ায় ১১৭। অর্থাৎ হ্যাম এবং ভিআইপি-র ৮ আসন সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন