নালন্দা বিষ মদ কান্ডে ১৩ জনের মৃত্যুর পর কড়া সমালোচনার মুখে, জেডি-ইউ বিহারে তার জোটের অংশীদারদের হুমকি দিয়ে জানিয়েছে, হয় তারা মদ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে মিডিয়াকে বিবৃতি দেওয়া বন্ধ করুন অথবা সরকার থেকে সরে যান।
জেডি-ইউ বিধায়ক ডাঃ সঞ্জীব কুমার মঙ্গলবার বলেছেন, জোটের অংশীদারদের নেতাদের মিডিয়াতে যাওয়ার আগে যে কোনও বিষয়ে, বিশেষত মদ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলা উচিত।
কুমার বলেন, "বিহারে আমাদের চারটি দলের জোট আছে। এটা স্পষ্ট যে সব দলের আদর্শ এবং এজেন্ডা এক হবে না। আমাদের মধ্যে কোনো মতপার্থক্য থাকলেও, মিডিয়াতে কিছু বলার আগে আমাদের একসঙ্গে বসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।"
তিনি আরও বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি সর্বদা বিহারের উন্নয়নের দিকে নজর দেন। মুখ্যমন্ত্রীর মতের সঙ্গে কোনো দলের মতের মিল না হলে, তারা স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আলাদা হতে চাইলে কেউ বাধা দেবে না। কিন্তু জোট সরকারে থেকে প্রকাশ্যে এর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা আর সহ্য করা হবে না।"
শনিবার নালন্দায় বিষ মদ কান্ডে এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পরে বিজেপি এবং এইচএএম বিশেষ করে বিহারে মদ নিষেধাজ্ঞার দুর্বল বাস্তবায়নের জন্য নীতীশ কুমার সরকারের কড়া সমালোচনা করছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে মোর্চা খুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় জয়সওয়াল। তিনি বলেন, মদ নিষেধাজ্ঞা আইনের দুর্বল প্রয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পুলিশ ও মাফিয়াদের যোগসাজশ দায়ী।
বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং এইচএএম-এর সভাপতি জিতন রাম মাঝি এর আগে বলেছেন: "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যদি তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিতে পারেন, তাহলে কেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মদ নিষিদ্ধকে ইগোর লড়াই হিসেবে দেখছেন। তিনিও এই আইনটি প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।"
প্রসঙ্গত গত কয়েকদিন ধরেই বিজেপি এবং জেডিইউ নেতাদের মধ্যে নালন্দা কান্ড নিয়ে বিবৃতি পাল্টা বিবৃতি চলছে। এই ঘটনার পরে নীতিশ কুমারের সমালোচনা করে প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়েছেন একাধিক বিজেপি নেতা। পাল্টা যার উত্তর ধেয়ে এসেছে নীতিশ শিবির থেকেও।
বিহারে চার দলের এনডিএ জোটে সর্বাধিক ৭৪ আসন বিজেপির। বিজেপির থেকে অনেক কম ৪৫ আসন পেলেও মুখ্যমন্ত্রী হন জেডিইউ-এর নীতিশ কুমার। এনডিএ-র অন্য দুই শরিক হিন্দুস্থান আওয়ামী মোর্চা এবং বিকাশশীল ইন্সান পার্টির আসন যথাক্রমে ৪ ও ৩টি। এনডিএ-কে সমর্থন জানিয়েছেন ১ নির্দল বিধায়কও। ২৪৩ আসন বিশিষ্ট বিহার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১২২ আসন। গত বিধানসভা নির্বাচনে ৭৫ আসন পেয়ে একক বৃহত্তম দল হলেও সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়নি আরজেডিকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন