রাত পোহালেই গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন। ঠিক এর আগে ১১ জন গণধর্ষকদের মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিলকিস বানো। ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের দিনই ২০০২ সালের বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের 'ক্ষমা নীতি'র অধীনে মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার।
বিলকিসের ধর্ষকদের আগাম মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চলতি বছরের মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানায় গুজরাটের বিজেপি সরকার। সেই আবেদন গ্রহণ করে ১১ জন ধর্ষককে আগাম মুক্তির অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন বিলকিস। বুধবার তাঁর আইনজীবী আদালতে এই সংক্রান্ত একটি রিট পিটিশন জমা দেন।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ বিলকিসের দুটি আবেদন গ্রহণ করে। আদালতের তরফে বলা হয়েছে, আবেদন দুটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে এবং দেখা হবে যাতে একই বেঞ্চে দুই আবেদনের শুনানি হয়।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসের দিন ১১ জন ধর্ষক মুক্তি পাওয়ার পর বেশকিছু গোষ্ঠী তাদের মালা, মিষ্টি দিয়ে আলিঙ্গন করে স্বাগত জানিয়েছে। এই পদক্ষেপের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। গেরুয়া শিবিরের এই পদক্ষেপ দেশব্যাপী ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।
বিতর্কের মুখে ১১ জন ধর্ষককে মুক্তির সিদ্ধান্তে কেন্দ্রের অনুমোদনের কথা উল্লেখ করে গুজরাট সরকার শীর্ষ আদালতে জানিয়েছে, জেলের ভিতর তারা প্রত্যেকেই 'ভালো আচরণ' করত। সরকারের কৌঁসুলি আদালতে হলফনামা পেশ করে বলেন, দোষী সাব্যস্ত হওয়া প্রত্যেকেই ১৪ বছর জেল খেটেছে। তাই তাদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩ মার্চ আহমেদাবাদের কাছে রন্ধিকপুর গ্রামে ধর্ষিত হয়েছিলেন ২১ বছর বয়সী বিলকিস বানো। সেই সময় তিনি পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। গোধরায় সবরমতি ট্রেনে সহিংসতার ঘটনা থেকে প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে গিয়েছিলেন বানো। সেই সময়ই যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাঁকে। এমনকি চোখের সামনে তাঁর ৩ বছরের কন্যা সন্তান সহ পরিবারের ৯ সদস্যকে হত্যা করেছিল ধর্ষকরা।
গোধরার ৬ বারের বিজেপি বিধায়ক এবং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী চন্দ্রসিংহ রাউলজি ১১ জন ধর্ষককে 'সংস্কারী ব্রাহ্মণ' হিসাবে বর্ণনা করেছেন। ধর্ষকদের আগাম মুক্তির সিদ্ধান্তের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন রাউলজি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন