সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে গেল বিলকিস বানোর আর্জি। গত ৩০ নভেম্বর, ১১ জন ধর্ষকের আগাম মুক্তির বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন (আবেদন) দাখিল করেছিলেন গুজরাট হিংসার শিকার বিলকিস বানো। শনিবার, তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সাত সদস্যকে খুন করা হয়। কিন্তু, গত ১৫ অগস্ট, ভারতের ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের দিন বিলকিস গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের ছেড়ে দেয় গুজরাট সরকার।
জানা যাচ্ছে, চলতি বছরের মে মাসে, বিলকিস বানোর ধর্ষকদের আগাম মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানায় গুজরাটের বিজেপি সরকার। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ১১ জন ধর্ষককে আগাম মুক্তির অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে ৩০ নভেম্বর, শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস। আদালতে এই সংক্রান্ত একটি রিট পিটিশন জমা দেন তাঁর আইনজীবী।
বিলকিস দাবি করেছিলেন, ১১ জন ধর্ষককে ছেড়ে দেওয়ার খবরে তিনি হতবাক। রিভিউ পিটিশনে তিনি জানান, 'শীর্ষ আদালতের নিয়ম লঙ্ঘন করে ১১ জন ধর্ষককে ছেড়ে দিয়েছে গুজরাট সরকার। যা সমাজের 'বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।'
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার দিবসের দিনে ধর্ষকদের কার্যত বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে। মিষ্টি বিতরণ করা হয়। তারপরেই, বিলকিস তথা দেশ ও দুনিয়া জানতে পারে যে জঘন্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের আগাম মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এরপরেই, ন্যায় বিচার চেয়ে ভারতের শীর্ষ আদালতে আবেদন করেন বিলকিস বানোর আইনজীবী। কিন্তু তাঁর সেই আবেদনের ইতিবাচক সাড়া মিলল না এদিন।
গুজরাট গণধর্ষণকাণ্ডে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন - যশবন্ত নাই, গোবিন্দ নাই, শৈলেশ ভট্ট, রাধ্যেশ্যাম শাহ, বিপিন চন্দ্র জোশী, কেসারভাই ভোহানিয়া, প্রদীপ মোরধিয়া, বাকাভাই ভোহানিয়া, রাজুভাই সোনি, মিতেশ ভাট এবং রমেশ চন্দনা।
২০০২ সালের ৩ মার্চ, বিলকিসকে গোধরা হিংসা চলাকালীন গণধর্ষণ করা হয়েছিল। এইসময়েই তাঁর তিনবছরের মেয়ে সহ ১৪জনকে খুন করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন