গত ৩০ নভেম্বর ১১ জন গণধর্ষকদের মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিলকিস বানো। সোমবার বানোর সেই আবেদন গ্রহণ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই আগামী ১৩ ডিসেম্বর বিচারপতি অজয় রাস্তোগি এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিভেদের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে।
স্বাধীনতা দিবসের দিনই ২০০২ সালের বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের 'ক্ষমা নীতি'র অধীনে মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। গত ৩০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পি এস নরসিমা এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের সম্বন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চে পিটিশন জমা দিয়েছিলেন বিলকিসের আইনজীবী শোভা গুপ্তা।
আদালতে শোভা জানান, আবেদনটি পর্যালোচনার জন্য এখনও তালিকাভুক্ত করা হয়নি। অস্থায়ী তারিখ হিসেবে ৫ ডিসেম্বরের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি জানান, পদ্ধতি মেনেই পুরো প্রক্রিয়াটি চলবে। শুনানির জন্য কোন তারিখ দেওয়া যায় সেটা দেখে নিয়ে খুব শীঘ্রই দিন ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার পর তোলপাড় হয় সারা দেশ। গুজরাট এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে বারবার কাঠগড়ায় তোলে বিরোধীরা। ১১ জন ধর্ষকের মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিআইএল জমা দেন সিপিআই(এম) নেত্রী সুভাষিণী আলি, স্বাধীন সাংবাদিক রেবতী লাউল এবং লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য রূপ রেখা ভার্মা সহ আরও অনেকেই। ইতিমধ্যেই সেই পিআইএলগুলি গ্রহণ করেছে শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৯ জুলাই-র মওকুফ নীতির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে ১১ জন ধর্ষকের আগাম মুক্তির সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করার কথা জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
নিজের আবেদনে বিলকিস জানান, ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের আগাম মুক্তির বিষয়টি জানার পর সম্পূর্ণ ফাইল এবং যাবতীয় নথিপত্র খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু, বারংবার মনে করিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও সরকারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাইনি। বানোর কথায়, এতবড় অপরাধের শিকার হওয়া সত্ত্বেও তাঁর দোষীদের মুক্তির বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। গত ১৫ আগস্ট ১১ জন ধর্ষকের মুক্তির পর পুরো বিষয়টি জানতে পারেন তিনি।
পুনর্বিবেচনার আবেদনে বলা হয়েছে, "২০০৩ সালের ৮ মে একটি নির্দেশিকা জারি করে ১৯৯২ সালের ৯ জুলাইয়ের নীতিটি বাতিল করা হয়। এরপরেও সেই নীতিটি মওকুফের আবেদনের জন্য প্রাসঙ্গিক কিনা তা পরীক্ষা করা দরকার ছিল।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন