সরকারী অনুষ্ঠান। মঞ্চে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি। আর, সেই সরকারি মঞ্চেই রয়েছেন ২০০২ সালের বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত শৈলেশ ভট্ট (Shailesh Bhatt)। পাশে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ যশবন্ত ভাভোর ও বিধায়ক শৈলেশ ভাভোর। আর, এই চিত্র সামনে আসার পরে রাজনৈতিক মহল জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
২৫ মার্চ, বিজেপি বিধায়ক শৈলেশ ভাভোর একটি টুইট করেছেন। তা থেকে জানা যায়, গুজরাটের দাহোদ জেলার লিমখেদাতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে বিজেপি সাংসদ-বিধায়কের সঙ্গে এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিলকিস বানোর ধর্ষক।
এ প্রসঙ্গে শৈলেশ ভাট জানায়, ‘আমি সেখানে পুজোর জন্য গিয়েছিলাম।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে চাননি।
বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলা নিয়ে এমনিতেই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। সময়ের আগেই আসামিদের মুক্তি দেওয়া নিয়ে বিতর্কও দানা বেঁধেছে। জল গড়িয়েছে শীর্ষ আদালত অবধি। এর মধ্যে এই ছবি সামনে আসায়, জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।
২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সাত সদস্যকে খুন করা হয়। কিন্তু, ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট, ভারতের ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের দিন বিলকিস গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের ছেড়ে দেয় গুজরাট সরকার।
গত বুধবার (২২ মার্চ), এই আসামীদের 'মুক্তির’ বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনের শুনানি করতে রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে, সেই আবেদনের শুনানির আগেই, গুজরাটে সরকারী মঞ্চে দেখা গেল বিলকিস বানোর ধর্ষককে! এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিরোধীরা। এই ঘটনাকে "লজ্জাজনক" বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
বিলকিস বানো গণধর্ষণকাণ্ডে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন - যশবন্ত নাই, গোবিন্দ নাই, শৈলেশ ভট্ট, রাধ্যেশ্যাম শাহ, বিপিন চন্দ্র জোশী, কেসারভাই ভোহানিয়া, প্রদীপ মোরধিয়া, বাকাভাই ভোহানিয়া, রাজুভাই সোনি, মিতেশ ভাট এবং রমেশ চন্দনা।
এই আসামীদের জেল থেকে বেরোনোর পর তাঁদের 'হিরো হিসাবে' মালা পরিয়ে স্বাগত জানানো হয়। সকলকে মিষ্টিমুখ করায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা।
২০০২ সালের ৩ মার্চ, বিলকিসকে গোধরাকাণ্ডে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। তাঁর তিনবছরের মেয়ে সহ ১৪ জনকে খুন করা হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন