বিলকিস গণধর্ষণ কাণ্ডে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের জন্য আরও সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল দোষীরা। শীর্ষ আদালত এই আবেদনের তালিকা তৈরি করতে সম্মত হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় দোষীদের আগাম মুক্তির আদেশ খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। ১১ জন দোষীকেই ২ সপ্তাহের মধ্যে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার প্রথমে ৩ দোষীর হয়ে আদলতে আবেদন দায়ের করেন সিনিয়র আইনজীবী ভি চিতাম্বরেশ। আবেদনের দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন, দোষীদের কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য আর মাত্র ৩দিন সময় রয়েছে। এই তিনজন হল - রমেশ রূপভাই চন্দনা, মিতেশ চিমনলাল ভাট এবং গোবিন্দভাই নাই।
বিচারপতি বিভি নাগারথনা শুক্রবার এই মামলার শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের অনুমতি চাইতে রেজিস্ট্রিকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি উজ্জল ভূঁইয়ার সমন্বয়ে বেঞ্চ গঠন করতে চেয়েছেন বিচারপতি বিভি নাগারথনা।
পরে আরও ২ জন দোষী - প্রদীপ রমন লাল মোদিয়া এবং বিপিন চন্দ্র জোশীও অতিরিক্ত সময় চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়।
এর কিছু সময় পর আরও দুই দোষী রাধেশ্যাম ভগবান দাস এবং রাজুভাই বাবুলাল সোনি শীর্ষ আদালতে একই আবেদন জানায়।
গোবিন্দভাই নাই এবং প্রদীপ রমনলাল আরও চার সপ্তাহ সময় চেয়েছে। বাকি দোষীরা প্রত্যেকেই ৬ সপ্তাহের সময় চেয়েছে।
রমেশ রূপভাই নিজের আবেদনে জানিয়েছে, তার ছেলের বিয়ে রয়েছে এবং অনেক দায়িত্ব পালন করতে হবে তাকে। মিতেশ চিমনলাল শীতকালীন ফসল কাটার জন্য সময় চেয়েছে। বিপিন চন্দ্র জোশী পায়ে অস্ত্রোপচারের কারণে ৬ সপ্তাহের সময় চেয়েছে। প্রদীপ রমনলাল জানিয়েছে, সম্প্রতি তার ফুসফুসের অপারেশন হয়েছে, তার বিশ্রামের প্রয়োজন। গোবিন্দভাই নাইও নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে অতিরিক্ত সময় চেয়েছে। রাধেশ্যাম ভগবান দাস এবং রাজুভাই বাবুলাল উভয়ই নিজ নিজ পরিবারের জন্য আর্থিক ব্যবস্থা করার জন্য সময় চেয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩ মার্চ আহমেদাবাদের কাছে রন্ধিকপুর গ্রামে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বিলকিস বানো। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল ২১ এবং তিনি পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। গোধরায় সবরমতি ট্রেনে সহিংসতার ঘটনা থেকে প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে যাওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে। তাঁর সন্তান সহ তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল। ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট ‘রেমিশন পলিসি’ অনুসারে এই ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত এগারো জনকেই মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন