তারিখ পে তারিখ। সুপ্রিম কোর্টে বারে বারে পিছিয়ে যাচ্ছে বিলকিস বানো (Bilkis Bano)-র ধর্ষকদের আগাম মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলার শুনানি। আর, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৩৫০০-র অধিক বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্টজনেরা। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্ট-কে উদ্দেশ্য করে খোলা চিঠি লিখেছেন তাঁরা।
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর ৯ মে- মঙ্গলবার ছিল এই মামলার শুনানি। কিন্তু, তাও পিছিয়ে গেছে। তারপরেই, সুপ্রিম কোর্ট-কে উদ্দেশ্য করে খোলা চিঠি লিখেছেন ৩৫০০-র অধিক বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্টজনেরা। বিলকিস বানোর জন্য ন্যায় বিচার এবং আসামীদের ‘অকাল মুক্তির’ বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনের শুনানিতে বিলম্বের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। সকলেই চিঠিতে জানতে চেয়েছেন যে, একজন ভারতীয় মহিলা কোথায় যাবেন, যদি সুপ্রিম কোর্ট এই ধরনের বিষয়ে শুনানির করতে না চায়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, 'দেশের নাগরিকর হিসাবে আজ আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচার পাওয়ার সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করার জন্য নির্মম চেষ্টা চলছে। ক্রমবর্ধমান শঙ্কার সাথে আমরা এও দেখছি যে, কীভাবে কৌশল এবং পদ্ধতিগত মামলাকে বিলম্বিত করার অপচেষ্টা চলছে। এবং,আমরা এও দেখছি যে, ন্যায় বিচারের জন্য বিলকিস বানো এখনও অপেক্ষা করছেন। তা পেতে তিনি এখনও আশাবাদী। কিন্তু, তা এখনও শোনা যাচ্ছে না।'
এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বিশিষ্ট লেখিকা ও সমাজকর্মী সৈয়দা হামিদ, নারীবাদী ইতিহাসবিদ ও পণ্ডিত উমা চক্রবর্তী, ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদ ইরফান হাবিব, পিইউসিএল সভাপতি কবিতা শ্রীবাস্তব, প্রখ্যাত নাট্য শিল্পী মায়া কৃষ্ণ রাও, সমাজ কর্মী অঞ্জলি ভরদ্বাজ, বাণী সুব্রামানিয়ান, রিসোর্স সেন্টারের বাণী সুব্রামানিয়ান, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিবেদিতা মেনন এবং ভারতীয় মহিলা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যানি রাজা প্রমুখ।
২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সাত সদস্যকে খুন করা হয়। এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন ১১ জন। কিন্তু, ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট, এই ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের আগাম মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার।
গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস বানো-সহ বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ। পিআইএল জমা দেন সিপিআই(এম) নেত্রী সুভাষিণী আলি, স্বাধীন সাংবাদিক রেবতী লাউল এবং লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য রূপ রেখা ভার্মা সহ আরও অনেকে।
প্রথমে সেই আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। এরপর, ২৪ জানুয়ারি, দ্বিতীয়বার আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিলকিস বানো। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গত ২২ মার্চ, বিলকিস বানোর মামলার আবেদনের শুনানিতে রাজি হয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, সেই শুনানি বারে বারে পিছিয়ে যাচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন