২০০২ সালের বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের 'ক্ষমা নীতি'র অধীনে মুক্তি দিল গুজরাট সরকার। সংবাদ সংস্থা পিটিআই একথা জানিয়েছে।
গুজরাট গণধর্ষণকাণ্ডে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন - যশবন্ত নাই, গোবিন্দ নাই, শৈলেশ ভট্ট, রাধ্যেশ্যাম শাহ, বিপিন চন্দ্র জোশী, কেসারভাই ভোহানিয়া, প্রদীপ মোরধিয়া, বাকাভাই ভোহানিয়া, রাজুভাই সোনি, মিতেশ ভাট এবং রমেশ চন্দনা। যদিও সূত্র অনুসারে ১১ জন ধর্ষক বন্দীর মুক্তির সিদ্ধান্তে সহমত নয় কেন্দ্রীয় সরকার ও গুজরাট সরকার।
গুজরাটের গোধরা সাব-জেলে বন্দী ছিলেন ওই ১১ জন আসামী। এই প্রসঙ্গে পঞ্চমহলের কালেক্টর সুজল মায়াত্র জানান, "কয়েক মাস আগে গণধর্ষণ মামলার ১১ জন আসামীকে মুক্তির বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটিতেই সরকারের 'ক্ষমা নীতি' অনুযায়ী ১১ জন আসামীকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল। গতকাল (সোমবার) আমরা তাঁদের মুক্তির আদেশ পেয়েছি।"
২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারী, মুম্বাইয়ের একটি বিশেষ সিবিআই আদালতে এই মামলার শুনানি হয়েছিল। বিলকিস বানোর পরিবারের ৭ সদস্যকে গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ১১ জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল মুম্বাইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। যদিও বোম্বে হাইকোর্ট এই মামলার রায় দিতে দেরি করেছিল।
এই ১১ জন অভিযুক্ত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দী ছিলেন এবং এদের মধ্যে একজন নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। পঞ্চমহলের কালেক্টর সুজল মায়াত্র আরও জানান, সুপ্রিম কোর্ট গুজরাট সরকারকে ওই ব্যক্তির সাজা মুকুবের বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল। ঠিক এরপরেই রাজ্য সরকারের তরফে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির প্যানেলে মিস্টার মায়াত্র-র নামও ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩ মার্চ আহমেদাবাদের কাছে রন্ধিকপুর গ্রামে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ২১ বছর বয়সী বিলকিস বানো। সেই সময় তিনি পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। গোধরায় সবরমতি ট্রেনে সহিংসতার ঘটনা থেকে প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে গিয়েছিলেন বানো। সেই সময়ই যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাঁকে। এমনকি তাঁর তিন সন্তানও নিহত হয়েছিল।
সেই সময় এই মামলাটি চলছিল আহমেদাবাদে। কিন্তু ঘটনার মূল সাক্ষীদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বানো। এরপর ২০০৪ সালের আগস্টে শীর্ষ আদালত মামলাটি মুম্বাইয়ে স্থানান্তরিত করে। তবে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে পুলিশ ও দুই চিকিৎসক সহ সাতজনকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন