‘ক্ষমতায় জিততে বিজেপি রাম মন্দিরেও হামলা করতে পারে। এমনকি নিজের দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে হত্যাও করতে পারে।‘ কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপিকে নিয়ে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন সত্যপাল মালিক।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিউজক্লিকে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন গোয়া, মেঘালয়, বিহারের প্রাক্তন রাজ্যপাল এবং জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন উপ-রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। সেখানে মণিপুর সহ একাধিক ইস্যুতে বিজেপি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সত্যপাল মালিক বলেন, “আমার আশঙ্কা ক্ষমতার জন্য এঁরা রাম মন্দিরে বিস্ফোরণ করিয়ে দিতে পারে। বিজেপি’র কোনও গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে হত্যা করাতে পারে। সেই ক্ষমতা ওঁর (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) আছে। যে পুলওয়ামা করাতে পারে, সে সবকিছুই করাতে পারে। পুলওয়ামার ঘটনার পর যেভাবে উনি আমায় চুপ করিয়ে দিয়েছিলেন, তাতে এটাই প্রমাণিত হয়।“
তিনি বলেন, “মোদী যদি এখনই ছেড়ে দেন, সেটাই ওঁর জন্য ভালো হবে। হেরে গেলে সম্মানটা কোথায় থাকবে? আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি ২০২৪-এর ভোটে এরা জিতবে না।’
মণিপুরে দীর্ঘ তিনমাস ধরে চলমান জাতিগত হিংসায় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছেন বিরোধী সাংসদরা। কিন্তু এখনও নীরব প্রধানমন্ত্রী, উল্টে বিভিন্ন রাজ্যে জনসভা করছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে সত্যপাল মালিক বলেন, “সংসদকে কোনও পরোয়াই করেন না প্রধানমন্ত্রী। উনি ভুল করছেন। ওনার সংসদে আসা উচিত, কথা বলা উচিত। যাতে মণিপুরের বাসিন্দাদেরও মনে হয় কেউ তাঁদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। উনি আসলে নিজের কথা ছাড়া কিছুই ভাবেন না। দেশের মহিলাদের নিরাপত্তা, মণিপুর – কোনও কিছু নিয়েই তিনি চিন্তিত নন।“
দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সাথে ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার পরিস্থিতির তুলনা করে মালিক বলেন, “সেই পরিস্থিতি অনেক ভালো ছিল। এখন যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে গোটা দেশজুড়ে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। অত্যন্ত ছোটলোকের হাতে ক্ষমতা রয়েছে।“
ইন্দিরা গান্ধীর সময়ের দুটো ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, "লালকৃষ্ণ আডবাণী যখন হেফাজতে ছিলেন, তখন রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন না উনি। ওনার বাসভবনের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। ওনার স্ত্রীকে ঘর ছেড়ে কোথাও যেতে হয়নি। বাসভবনের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধীজি। সেই চিঠিও আডবাণীজীর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। এটা আজকের পরিস্থিতিতে সম্ভব? অটল বাজপেয়ীজীকে একদিনও জেলে নিয়ে যাওয়া হয়নি। গ্রেফতারের পরই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এমারজেন্সি শেষ না হওয়া পর্যন্ত উনি ওখানেই ছিলেন। এই শিষ্টাচার ছিল তখন। এখন নেই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তো আমার সমস্ত সিকিউরিটি তুলে নিয়েছেন, কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম বলে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন