ফের গরুকে জাতীয় পশু করার প্রস্তাব উঠল। এবারে একেবারে সংসদের অধিনেশনে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই আবদার করে বসলেন রাজস্থানের আজমের-এর বিজেপি সাংসদ ভগীরথ চৌধুরী। সোমবার লোকসভায় ওই বিজেপি সাংসদ কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিকে লিখিতভাবে জিজ্ঞেস করেন, ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত ‘গোমাতা’কে জাতীয় পশুর তকমা দেওয়া যায় কি না! তবে কেন্দ্রের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভারতের জাতীয় পশু বাঘ। আর কোনও প্রাণীকে আপাতত ওই তকমা দেওয়ার কোনও চিন্তাভাবনা নেই কেন্দ্রের।
এদিন আজমের-এর বিজেপি সাংসদ লোকসভার বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রকে বলেন, “গরু ভারতীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গরু আমাদের সনাতন ধর্মের প্রতীক। তাই কেন্দ্রের কাছে আমার আবেদন, গোমাতা-কে কি দেশের জাতীয় পশুর তকমা দেওয়া যায়?” পাশাপাশি ভারতীয় সংস্কৃতি ও সনাতন ধর্মের প্রতীক হিসেবে গোমাতাকে মান্যতা দিতে, গো-রক্ষার জন্য এবং সনাতন ধর্মকে ছড়িয়ে দিতে কোনও আইন প্রণয়ন করা যায় কি না সে বিষয়েও প্রশ্ন করেন তিনি।
ওই বিজেপি সাংসদের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি সাফ জানিয়েছেন, “ইতিমধ্যেই বাঘকে জাতীয় পশু এবং ময়ূরকে জাতীয় পাখির তকমা দেওয়া রয়েছে। এই দুটি প্রাণীই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, ১৯৭২-এর শিডিউল-১ এর অন্তর্ভুক্ত। ২০১১ সালে ফের বাঘ ও ময়ূরকে যথাক্রমে জাতীয় পশু ও জাতীয় পাখির আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এখনই অন্য কোনও প্রাণীকে জাতীয় পশু তকমা দেওয়ার কোনও চিন্তাভাবনা নেই কেন্দ্রের।” তবে তিনি এও জানিয়েছেন, “দেশের পশুপালন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সংবিধানের ২৪৬(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা বণ্টনের যে অধিকার রয়েছে, তাতে পশুপালন সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য আইনসভার আইন প্রণয়নের একচেটিয়া ক্ষমতা রয়েছে।”
তবে গো-রক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের অন্য পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন রেড্ডি। তাঁর মতে, ভারতের পশুপালন ও ডেয়ারি মন্ত্রকের তরফে ‘রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন’ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় দেশীয় প্রজাতির গরু ও অন্যান্য গৃহপালিত পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের উন্নয়নের জন্যে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এমনকি তিনি এও জানিয়েছেন, গো-রক্ষার জন্য কেন্দ্রের তরফে একটি ওয়েলফেয়ার বোর্ডও তৈরি করা হয়েছে। তবে গরুকে জাতীয় পশুর তকমা দেওয়ার দাবি এই প্রথম নয়। এর আগেও দেশে একাধিকবার এই প্রাণীকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানের দাবি তোলা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন