২০২০ সালে নিজেকে দেউলিয়া হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু, পরে তদন্তে নেমে আয়কর বিভাগ জানতে পেরেছে - অনিল আম্বানি ‘সত্য’ বলেননি। বিদেশে তাঁর অঘোষিত বিপুল সম্পত্তি আছে। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮০০ কোটি টাকার বেশি। সোমবার অনিল আম্বানিকে নতুন করে আবার নোটিশ পাঠিয়েছে আয়কর দপ্তর। বিদেশে সম্পত্তির বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে ওই নোটিশে।
এই প্রথম নয়, ২০১৯ সালে 'ব্ল্যাক মানি অ্যাক্টে' অনিল আম্বানিকে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে নিজেকে 'দেউলিয়া' বলে ঘোষণা করেন অনিল আম্বানি। একইসঙ্গে তিনি জানান, তাঁর মোট সম্পদের মূল্য 'শূন্য'। অথচ বিভিন্ন সময়ে একাধিক বিদেশি ব্যাংকে তাঁর লেনদেন প্রকাশ্যে এসেছে। সঙ্গে সামনে এসেছে অঘোষিত অফশোর সম্পদের বিষয়টি।
২০২২ সালের মার্চ মাসে অনিল আম্বানিকে নোটিশ জারি করেছিল আয়কর দপ্তরের মুম্বই শাখা। ২০১৫ ব্ল্যাক মানি অ্যাক্টে (BMA) তাঁর কাছ থেকে অঘোষিত অফশোর সম্পদ ও বিনিয়োগ নিয়ে জবাব চাওয়া হয়। তবে অভিযোগ, কোনও সদুত্তর দেননি তিনি। বরাবরই এড়িয়ে গিয়েছেন আয়কর দপ্তরের নোটিশ।
অন্যদিকে ব্ল্যাক মানি অ্যাক্টের আওতায় অনিল আম্বানিকে নতুন করে যে নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তাতে হদিশ পাওয়া অফশোর সম্পত্তি'র কথা জানিয়েছে আয়কর দফতর। জানা যাচ্ছে, নোটিশে বাহামা এবং ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে (BVI) অনিল আম্বানির সুবিধাভোগী মালিকানার তথ্য দেওয়া হয়েছে। ২০০৬ সালে বাহমাতে, ডায়মন্ড ট্রাস্টের সঙ্গে ‘অতি গোপনে’ অফশোর কোম্পানি ড্রিমওয়ার্ক হোল্ডিংস (Dreamwork Holdings Inc) চালু করেন অনিল।
ফরেন ট্যাক্স অ্যান্ড ট্যাক্স রিসার্চ (FTTR) বিভাগের মাধ্যমে বাহামা সরকারকে অনিল আম্বানির তথ্য প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছিল সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ডিরেক্ট টাক্সেস (CBDT)। তারপরেই সুইস ব্যাঙ্কে অনিল আম্বানির অ্যাকাউন্টের বিষয় সামনে আসে। যেটি সুইজারল্যান্ডের ইউনিয়ন বাঙ্কের (USB) জুরিখ শাখাতে খোলা হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, ২০১০ সালে ব্রিটিশ ভার্জিন আইলান্ড (BVI)-এ অনিল আম্বানি আরেকটি অঘোষিত অফশোর কোম্পানি চালু করেছিলেন। যার নাম উত্তর আটলান্টিক ট্রেডিং আনলিমিটেড (North Atlantic Trading Unlimited)। এই কোম্পানির সঙ্গে ব্যাংক অফ সাইপ্রাসের (Bank of Cyprus) একটি লিঙ্কযুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘প্যান্ডোরা পেপারস’ (Pandora Papers) জানা গিয়েছিল, অনিল আম্বানির কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত এমন ১৮ টি আকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে বিদেশে। সেই তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত।
২০১৫ সালে ‘কালো টাকার কারবারিদের’ যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল ‘সুইস লিক্স’ (Swiss Leaks)-এ, তাতে অনিল আম্বানির নাম ছিল। জানা যায়, ২০০৬-৭ সালে হংকং সাংহাই ব্যাঙ্ক কর্পোরেশন (HSBC)-এ অনিল আম্বানির অর্থের পরিমাণ ছিল ২৬.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন