ব্যাঙ্কের হিসাব দেখার জন্য এবার ক্যাগের পর্যবেক্ষণ চাইল ব্যাঙ্ক কর্মী সংগঠন। বেসরকারিকরণের আগে ব্যাঙ্কের হিসেবের খাতা পরীক্ষা করে দেখুক ক্যাগ। অনুৎপাদক সম্পদ অর্থাৎ এনপিএ মুছতে কেন্দ্রীয় সরকারের কত টাকা লোকসান হয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হোক, দাবি সংগঠনের।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের অভিযোগ, মোদি জমানায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের খাতা থেকে প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ ঋণ মুছে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র অবশ্য দাবি করেছে, এনপিএ মুছে দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, ঋণ মকুব করে দেওয়া হল। কিন্তু পরে মাত্র ৪.৪৮ লক্ষ কোটি টাকার অনাদায়ি ঋণ উদ্ধার হয়েছে।
পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ১৯ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি নতুন এনপিএ। অনাদায়ি ঋণ মেটাতে কেন্দ্রকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ৩.২৬ লক্ষ কোটি টাকার বেশি পুঁজি ঢালতে হয়েছে। ফলে রাজকোষের কত টাকা ক্ষতি হয়েছে, তার পরীক্ষা হওয়া দরকার।
কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত বলেন, ‘যে সব বেসরকারি সংস্থা ঋণ শোধ না করার ফলে রাজকোষের ক্ষতি হচ্ছে, কেন্দ্র তাদের হাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলিকে তুলে দিতে চাইছে অর্থাৎ বেসরকারিকরণ আসলে একটা সমস্যা।’
প্রসঙ্গত, ১৩টি বেসরকারি সংস্থা প্রায় ৪.৮৬ লক্ষ কোটি টাকা ধার শোধ করেনি। ফলে ব্যাঙ্কের প্রায় ২.৮৫ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। তবে সোমবার অর্থমন্ত্রক সংসদে প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, কোন দু’টি ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ করা হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি।
ইতিমধ্যে, আগামী ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর দেশজুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ব্যাঙ্কের সব কর্মী সংগঠন নিয়ে গঠিত ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন (ইউএফবিইউ)। পাশাপাশি যৌথ বিবৃতি দিয়ে 'ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ বিল' প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ও কর্মী ফেডারশন ও অ্যাসোসিয়েশন সমূহ।
ফোরাম জানাচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের টাকা জনগণের। সেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের অর্থ কর্পোরেটদের হাতে জনগণের টাকা তুলে দেওয়া। এভাবে দেশে বড় বড় কর্পোরেট ঋণখেলাপীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ব্যাঙ্ক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন