নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত সঠিক পদ্ধতিতে নেওয়া হয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করার ক্ষমতা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। এ নিয়ে হাত গুটিয়ে থাকতে পারে না বিচার বিভাগ। কারণ, এটি একটি অর্থনৈতিক নীতিগত সিদ্ধান্ত। মঙ্গলবার, কেন্দ্রকে একথা স্পষ্ট জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-র কৌঁসুলি আদালতে দাবি করেন, কেন্দ্রের অর্থনৈতিক নীতিগত সিদ্ধান্তের উপর কোনও পর্যবেক্ষণ দিতে পারে না বিচার বিভাগ। এরপরই, হুঁশিয়ারির সুরে আদালত জানায় - ‘এ বিষয়ে হাত গুটিয়ে থাকতে পারে না বিচার বিভাগ।’
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ আবদুল নাজিরের (Justice S. A. Nazeer) নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির বেঞ্চে ২০১৬ সালে কেন্দ্রের ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে। এই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি বি. আর. গাভাই (Justice B. R. Gavai), বিচারপতি এ. এস. বোপান্না (Justice A. S. Bopanna), বিচারপতি ভি. রামাসুব্রামনিয়ান ( Justice V. Ramasubramanian), এবং বিচারপতি বি. ভি. নাগারথনা (Justice B.V. Nagarathna)।
এদিন শুনানিতে RBI-এর হয়ে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত। তিনি আদালতে নোট বাতিলের উদ্দেশ্য হিসাবে কালো টাকা (black money) এবং জাল মুদ্রা (fake currencies) নিয়ন্ত্রণের কথা তুলে ধরেন।
এরপরে, নোট বাতিলের পক্ষে সওয়াল করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও পর্যবেক্ষণ দিতে পারে না বিচারবিভাগ (আদালত)।
জবাবে, বিচারপতি বিভি নাগারথনা স্পষ্ট জানান, সিদ্ধান্তের যোগ্যতার মধ্যে যাবে না আদালত। তবে, এটি কিভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে - তা পরীক্ষা করার ক্ষমতা আছে আদালতের।
বিচারপতি বিভি নাগারথনা বলেন, ‘এটি একটি অর্থনৈতিক নীতিগত সিদ্ধান্ত বলেই, আদালত হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না।’
প্রসঙ্গত, গত ১২ অক্টোবর, এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি (Attorney General R. Venkataramani)। তিনি বলেন, 'নোট বাতিল সরকারের একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। সেই ব্যাপারে আদালতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।'
তিনি দাবি করেন, 'আইন মেনেই নোট বাতিল করা হয়েছিল। অর্থনীতির ক্ষতি আটকাতে ১৯৭৮ সালে জনস্বার্থে কিছু উচ্চ মূল্যের নোটের বিমুদ্রাকরণের লক্ষ্যে আইন তৈরি হয়েছিল।'
মঙ্গলবার, একই প্রসঙ্গ টেনে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি বলেন, নোট বাতিলের অর্থনৈতিক নীতি সামাজিক নীতির সাথে যুক্ত ছিল। এর মাধ্যমে সমাজের ৩টি খারাপ দিক মোকাবেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন