মণিপুরে গিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, মানহানি ও দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে তিন মহিলা নেত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের হল এফআইআর। ৮ জুলাই ইম্ফল থানায় অ্যানি রাজা, নিশা সিদ্ধু ও দীক্ষা দ্বিবেদির বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। এঁরা ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান উইমেন (এন এফ আই ডবলু) নামক একটি জাতীয় স্তরের তথ্য অনুসন্ধানকারী সংস্থার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। অ্যানি রাজা ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এবং নিশা সিদ্ধু সংগঠনের জাতীয় সম্পাদক। অন্যদিকে, দীক্ষা দ্বিবেদি দিল্লি নিবাসী এক আইনজীবী।
গত ২৮ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত ওই সংগঠনের তরফে এই তিন মহিলার দল মণিপুর সফরে গিয়েছিল। সেখানে তাঁরা একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন, যেখানে তাঁদের করা মন্তব্যের উপর ভিত্তি করেই ইম্ফল থানায় জনৈক এল. লিবেন সিং অভিযোগ জানান। যার ভিত্তিতে তিন মহিলার নামে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, দাঙ্গায় উস্কানি ও মানহানি বিষয়ক ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, গত ২ জুলাই একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তিন নেত্রী জানান, “এই সংঘর্ষ কোনও সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা বা দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে নিছক কোনও সংঘর্ষ নয়। এর পিছনে জমি, সম্পদ নিয়ে বিবাদ এবং ধর্মীয় গোঁড়ামি ও জঙ্গীগোষ্ঠীর উপস্থিতির ইঙ্গিত রয়েছে। সরকার তাদের গোপন প্রো-কর্পোরেট উদ্দেশ্যগুলিকে বাস্তবায়িত করতে গিয়ে খাল কেটে কুমির এনেছে। যার ফলে আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
এমনকি এই পরিস্থিতিকে তাঁরা ‘রাষ্ট্রের মদতপুষ্ট দাঙ্গা’ বলেও অভিহিত করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এরপরেই ওই তিন মহিলার বিরুদ্ধে ‘একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণায় জনগণকে প্ররোচনা দেওয়া’-র অভিযোগ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুর মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে চলা সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। শিকেয় উঠেছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সে রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১২৫-এরও বেশি মানুষ এবং ঘরছাড়া কমবেশি ৩০ হাজার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন