প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সাথে জড়িত কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস করলো সিবিআই। পাশাপাশি ডুবতে থাকা কোম্পানি দিওয়ান হাউজিং ফিনান্স লিমিটেডের (ডিএইচএফএল)-এর দুই প্রোমোটার কপিল ওয়াধওয়ান এবং ধীরজ ওয়াধওয়ানের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেছে সিবিআই। সম্পর্কে ভাই কপিল এবং ধীরজ ইতিমধ্যেই অন্য একটি জালিয়াতি এবং দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দী রয়েছেন।
সিবিআই জানিয়েছে, "ভুয়ো এবং কাল্পনিক" অ্যাকাউন্ট খুলে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার গৃহঋণ নিয়েছেন কপিল এবং ধীরজ ওয়াধওয়ান। এর ফলে ভারত সরকারের কাছ থেকে সুদ ভর্তুকি বাবদ ১,৮৮০ কোটি টাকা পেয়েছে তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প। অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এবং নিম্ন ও মধ্য আয়ের ব্যক্তিদের পাকা ছাদ দেওয়া বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের আওতায় সুদে ভর্তুকি দিয়ে গৃহঋণ দেওয়া হয়। DHFL-এর মতো আর্থিক সংস্থাগুলি, যাদের কাছে গৃহঋণ দেওয়ার অনুমোদন রয়েছে, তারা এই ভর্তুকি দাবি করে।
সিবিআই আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে DHFL প্রথম বিনিয়োগকারীদের কাছে সরকারি ভর্তুকি পাওয়ার কথা জানায়। তারা জানায়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় তারা ৮৮ হাজার ৬৫১টি গৃহঋণ মঞ্জুর করেছে, যার ভর্তুকি বাবদ ৫৩৯.৪০ কোটি টাকা পেয়েছে তারা। বকেয়া রয়েছে ১,৩৪৭.৮০ কোটি টাকা। ফরেনসিক অডিট থেকে জানা যায়, ২.৬০ লক্ষ ভুয়ো হাউসিং লোন অ্যাকাউন্ট খুলেছে DHFL, যার অধিকাংশই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আওতায় এবং নিয়ম অনুসারে ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পর ভর্তুকিও এসেছে। এই ভর্তুকি হাসিলের জন্য সরকারি নথিতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার একটি ভুয়ো ঠিকানার উল্লেখ করা হয়েছে। এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৪,০৪৬ কোটি টাকার গৃহঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে, যার মধ্যে ১১,৭৫৫ কোটি টাকা আবার বিভিন্ন কাল্পনিক সংস্থায় জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।
গত বছর এপ্রিল মাসে ইয়েস ব্যাঙ্ক জালিয়াতি মামলায় কপিল এবং ধীরজ ওয়াধওয়ানকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ ছিল, ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা রাণা কাপুর DHFL-এর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছে। জুন মাসেই ওয়াধওয়ান ভাই এবং রাণা কাপুরের বিরুদ্ধে একটি চার্জশীট দায়ের করে সিবিআই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন