বিচারপতি নিয়োগে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের (Collegium) সুপারিশকৃত ১০ জন বিচারপতির প্যানেলকে অনুমোদন দেয়নি কেন্দ্র। পুরো ফাইলটি ফেরত পাঠিয়েছে মোদী সরকার (Modi Govt)। আর, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট (The Supreme Court)। আগামী ৮ ডিসেম্বর, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বিচারপতি সঞ্জয় কিশোর কল (Justice Sanjay Kishan Kaul) ও বিচারপতি এএস ওকা (Justice AS Oka)-র বেঞ্চে।
সূত্রের খবর, গত ২৫ নভেম্বর, কলেজিয়ামের যে ফাইল ফেরত পাঠিয়েছে কেন্দ্র, তাতে ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বিএন কৃপালের ছেলে তথা সমকামী আইনজীবী সৌরভ কৃপাল (Saurabh Kirpal)-এর নামও রয়েছে৷
২০১৭ সালে বিচারপতি পদে প্রথম সৌরভ কৃপালের নাম সুপারিশ করেছিল কলেজিয়াম। কিন্তু, চার বছর আগের সেই সুপারিশ আজও কার্যকর করেনি কেন্দ্র।
আইনি মহলের জল্পনা, সৌরভ কৃপাল প্রকাশ্যেই নিজেকে সমকামী বলে ঘোষণা করেছেন। সে কারণেই হয়তো তাঁর নিয়োগ আটকে রেখেছে মোদী সরকার। এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং সৌরভ কৃপাল।
কলেজিয়াম-এর সুপারিশ কার্যকরে বিলম্ব নিয়ে সৌরভ কৃপাল এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি মনে করি না সরকার অগত্যা একজন প্রকাশ্য সমকামী ব্যক্তিকে বেঞ্চে নিয়োগ করতে চায়।’
গত, দেড় বছরে কলেজিয়াম সুপারিশকৃত নাম দু'দুবার কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হলেও আজও তাদের নিয়োগ হয়নি। কেন তাদের নিয়োগ হচ্ছে না তার কোনও জবাবও দেয়নি কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টে কলেজিয়ামে নিয়োগ না হওয়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশন বেঙ্গালুরু।
গত ১১ নভেম্বর, এই মামলার শুনানিতে, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নিয়োগে ঢিলেমির জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা। তাঁরা বলেন, যেভাবে কেন্দ্র নিয়োগের ফাইল চেপে বসে আছে ও নিয়োগে ঢিলেমি চলছে তা বরদাস্ত করা যায় না।
এদিকে, কলেজিয়াম নিয়োগের তীব্র বিরোধিতা করেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু (Union Law Minister Kiren Rijiju)। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়াম ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করেন রিজিজু।
বিচারপতির মতামত উড়িয়ে দিয়ে রিজিজু বলেন, ‘কখনো বলবেন না ফাইলের (কলেজিয়াম নিয়োগের ফাইল) উপর চেপে বসে আছে কেন্দ্র। যদি এরকম বলেন, তবে আপনারা ফাইল সরকারকে পাঠাবেন না। নিজেরাই নিজেদের মতো যা করার করে নিন।’
আর, রিজুজুর এই মন্তব্যের পরে হুঁশিয়ারির সুরে বিচারপতি সঞ্জয় কিশোর কল ও বিচারপতি এএস ওকা-র বেঞ্চে জানিয়েছে,'আমাদের (নিয়োগ নিয়ে) বাধ্য করা হলে আমরা সেই রাস্তায় হাঁটতে দ্বিধা করব না। আশা রাখি, আমাদের সেই পথে হাঁটতে বাধ্য করা হবে না।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন