বন্ধ হচ্ছে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কেন্দ্রীয় প্রকল্প। গত বছরের এপ্রিল মাসে এই প্রকল্প চালু হয়েছিল। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্প চলবে। তারপর তা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গতবছর করোনা মহামারী শুরুর প্রথম পর্যায়ে যখন সাধারণ মানুষের খাদ্যাভাব ঘটে, তখন প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা নামে এই প্রকল্প চালু হয়। জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের অধীনে যাঁদের রেশন কার্ড রয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের কাছে প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য পৌঁছেছিল।
প্রথমে কয়েক মাসের জন্য চালু হলেও পরে তা ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়। করোনা মহামারীর দাপট বৃদ্ধিতে তা এবছরেও নভেম্বর মাস পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কেন্দ্রের খাদ্য সচিব সুধাংশু পান্ডে জানান, এই প্রকল্প আর চলবে না। অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে। খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রিও ভালো হয়েছে। সুতরাং এই প্রকল্প চলবে না।
যেহেতু এই প্রকল্পে চাল, গম দেওয়া হত। খোলা বাজারে চাল, গমের দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত। কেন্দ্র এমন এক সময় এই প্রকল্প বন্ধ করছে, যখন দারিদ্র্যসীমার নীচে বহু মানুষ চলে গিয়েছেন। আয় কমে গিয়েছে। কর্মহীনের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছে। জ্বালানির দাম আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত আরও পিছিয়ে পড়েছে। সামান্য খাদ্যশস্য দেওয়ার সরকারি প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত অপরাধ। সম্প্রতি বিশ্বের ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইন্ডেক্স সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইরিশ এইড ও জার্মান সংস্থা ওয়েস্ট হাঙ্গার হাইলফ।
রিপোর্ট বলছে, মহামারীতে সারাবিশ্বে অনাহারে থাকা মানুষের মোট সংখ্যা বেড়েছে। ভারতে সেই সংখ্যাটা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপালের থেকেও অবস্থা খারাপ। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশে অনাহার, অপুষ্টি যে চরম আকার নিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া অনুচিত হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন