মণিপুরের জাতিগত হিংসায় দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতেই ফের কেন্দ্রীয় সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে সরব হল কংগ্রেস। মঙ্গলবার এই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই চাঁচাছোলা ভাষায় মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে মণিপুর সরকার।
মঙ্গলবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সচিবালয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত জুলাই মাস থেকে ফিজম হেমজিৎ (২০) এবং হিজম লিনথোইংগাম্বি (১৭) নামের দুই ছাত্র নিখোঁজ ছিল। সম্প্রতি তাদের মৃতদেহের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, দুই ছাত্রের মধ্যে একজন নাবালক। প্রাথমিকভাবে মণিপুর পুলিশ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছিল। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, দুই ছাত্রকেই জাতিগত হিংসার শিকার হয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে।
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা প্রকাশ পেতেই সরব হয়েছে কংগ্রেস। টুইটারে (বর্তমানে X) প্রিয়াঙ্কা গান্ধী লেখেন, “মণিপুর থেকে আবারও এক মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। জাতিগত হিংসায় সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছে শিশুরাই। তাঁদের রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য আর তার জন্য যেকোনও পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। কিন্তু মণিপুরে একের পর এক যেধরণের জঘন্য অপরাধ ঘটে চলেছে, তা ভাবনার অতীত। তাও কোনোরকম প্রতিরোধ না করে সেগুলিকে চলতে দেওয়া হচ্ছে। নিজেদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের লজ্জা পাওয়া উচিত।” মণিপুর পুলিশ এই ঘটনার অপরাধীদের ধরার জন্য ইতিমধ্যেই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে থেকেই জাতিগত হিংসার আগুনে বিধ্বস্ত মণিপুর। সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের আইজি আই.কে মুইভা জানিয়েছেন, গত ৪ মাসে রাজ্যে অন্তত ১৭৫ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এবং ৩২ জন এখনও নিখোঁজ। রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত জুন মাসে মণিপুর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধান রাহুল গান্ধী। বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের প্রতিনিধিদলও গত জুলাই মাসে সেখানে যান। কংগ্রেসের তরফে প্রথম থেকেই মণিপুর সরকার ও কেন্দ্র সরকারের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে বিভিন্নভাবে আক্রমণ করা হয়। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পদত্যাগও দাবি করে বিরোধীরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন