সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখার দাবীতে করা মামলার শুনানির পর রায়দান স্থগিত রাখলো দিল্লি আদালত। সোমবারই এই মামলার শুনানি হয় দিল্লি হাইকোর্টে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি এন প্যাটেল এবং বিচারপতি জ্যোতি সিং-এর বেঞ্চ-এ এই মামলার শুনানি চলছে। এদিন মামলার আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা। অন্যদিকে সরকার পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
এদিনের শুনানিতে দুই পক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের সাক্ষী থাকে আদালত। করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিরোধিতা করে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা বলেন – কার্ফু জারি থাকা অবস্থায় যখন সব বন্ধ তখনি হঠাৎ করে সময়সীমার কথা জানিয়ে নির্মাণ সংস্থাকে বিশেষ অনুমতি দেওয়া হল। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের পাস দেওয়া হল। এই শ্রমিকদের এবং দিল্লির জনসাধারণের স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা ভীত। সম্পূর্ণ পরিস্থিতিতে আমরা ভীত।
তিনি আরও বলেন – প্রতিদিন প্রায় ৪০০ শ্রমিক সরাই কালে খান থেকে বাসে করে কাজ করতে আসছে। এর জন্য ১৮০টি বাস ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও ওই এলাকায় নিরাপত্তা কর্মী, গার্ডরাও কাজ করছেন।
যদিও সিদ্ধার্থ লুথরার পাল্টা তুষার মেহতা বলেন – এঁরা নিজেদের স্বার্থের জন্য সওয়াল করছেন। এঁরা শ্রমিকদের নিয়ে কোনো চিন্তা করেন না। আদালতকে ব্যবহার করে এই কাজ বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু ওরাও এই প্রকল্পের বিরোধী নন। তাছাড়াও এই প্রকল্পের সঙ্গে জনস্বার্থের কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আদালতের কাছে এক এফিডেভিট দাখিল করে দাবি করা হয় নির্মাণ স্থলে কর্মীদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানে অউশভিতসের কথা ব্যবহার করা হচ্ছে। এই উল্লেখ এখানে কীভাবে করা যায়। অউশভিতস জার্মানির এক কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের নাম।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনার ভয়াবহ আক্রমণের মাঝে ২০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি, সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রোজেক্টের কাজ এই মুহূর্তে বন্ধ করে সেই টাকা দিয়ে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করা হোক। যদিও বিরোধীদের দাবীতে সাড়া দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।
দেশজুড়ে সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্প নিয়ে বিতর্কের মাঝে গত সপ্তাহে সেন্ট্রাল পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট-এর পক্ষ থেকে সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রোজেক্টের কাজের ছবি তোলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিনা অনুমতিতে ওই চত্বরে ঢোকা, স্টিল বা ভিডিওগ্রাফী করার নিষেধাজ্ঞা লাগানো হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন