নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসে উত্তপ্ত ত্রিপুরা। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, বিরোধী দলের সাংসদেরও উপরে নেমে এসেছে আক্রমণ।
ভোট পরবর্তী হিংসার ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ রিপোর্ট করতে ত্রিপুরায় এসেছে বাম-কংগ্রেসের ৭ সাংসদের একটি প্রতিনিধিদল। শুক্রবার, তাঁরা ৩ দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেলেন।
অভিযোগ উঠেছে, ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগান তুলে তাঁদের উপর হামলা চালিয়েছে গেরুয়া বাহিনী। ২টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বোমা ছোঁড়া হয়েছে। সন্ত্রাসের মুখে পড়ে, কর্মসূচি বাতিল করে আগরতলায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন বাম-কংগ্রেসের সাংসদরা।
জানা যাচ্ছে, শুক্রবার, সেপাহিজলার বিশালগড় এবং পশ্চিম ত্রিপুরার কিছু সন্ত্রস্ত এলাকায় গিয়েছিলেন সিপিআই(এম)-র রাজ্যসভার সাংসদ এলামারাম করিম (কেরালা) এবং কংগ্রেসের লোকসভা সাংসদ আবদুল খালেক (আসাম)।
পশ্চিম ত্রিপুরার কলকালিয়া গ্রামে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের লোকসভা সাংসদ রঞ্জিত রঞ্জন (ছত্তিশগড়) এবং সিপিআই(এম)-র রাজ্যসভার সাংসদ এ এ রহিম (কেরালা) ও বিকাশ ভট্টাচার্য (পশ্চিমবঙ্গ)।
এবং, ত্রিপুরার দুর্গাবাড়ি, ঊষাবাজার, কালিকাপুর এলাকায় কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সিপিআই(এম)-র লোকসভার সাংসদ পিআর নটরাজন (তামিলনাড়ু) এবং সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বমের (কেরালা)। এই দলের সঙ্গে ছিলেন সিপিআইএমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এবং বিধানসভার প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার পবিত্র কর।
বাম ও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় সিপাহিজলা জেলার বিশালগড় মহকুমার নেহাল চন্দ্র নগর এলাকায় সন্ত্রাসের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন করিম, খালিকদের টিম। ত্রিপুরায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক অজয় কুমারও সেখানে ছিলেন।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সিপিআই(এম)-র ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাংসদদের প্রতিনিধিদলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছনো মাত্র ‘জয় শ্রী রাম', 'ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিয়ে তাঁদের আক্রমণ করে বিজেপি-আশ্রিত গুন্ডারা। কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেছে তারা।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম)-র রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিজেপি-শাসিত রাজ্যে এখন সাংসদরা পর্যন্ত নিরাপদ নন। এখানে পুরো গুন্ডা রাজ চলছে। আর, ‘জয় শ্রী রাম’ বলে যে হামলা হয়েছে, তা খুব পরিকল্পনা করেই করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সবথেকে বড় প্রশ্ন হলো, একজন নাগরিক কি স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারবে না? তাঁদেরকে পুলিসি নিরাপত্তা নিয়ে ঘুরতে হবে? যদি তাই হয়, তাহলে ভারতবর্ষে গণতন্ত্র রইলো কি করে, যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে না!’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন