তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের কাছে কাট্টুপাল্লি বন্দরের সম্প্রসারণকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম অসন্তোষ। আদানি গ্রুপের এই বন্দরের সম্প্রসারণ রুখতে রাজ্যের ডিএমকে সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশের প্রথমসারির পরিবেশবিদ-পরিবেশপ্রেমী, সমাজকর্মী, শিল্পী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। নেটমাধ্যমে ট্রেন্ড করছে #StopAdaniSaveChennai এবং #SavePulicat এর মতো হ্যাশট্যাগগুলি। আবার সোশ্যাল মিডিয়ার গণ্ডি ছাড়িয়ে চেন্নাই শহরের একাধিক জায়গায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভেও সামিল হচ্ছেন অনেকেই।
তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর জেলায় চেন্নাই শহরের কাছেই পুলিকট লেক পরিযায়ী পাখিদের জন্য একটি বিশেষ জায়গা। প্রতিবছর কয়েক লক্ষ পরিযায়ী পাখি এসে ওই লেকের আশেপাশে আশ্রয় নেয়। ফলে ওই বিশাল হ্রদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি স্বতন্ত্র জীববৈচিত্র্য। কিন্তু হ্রদের থেকে কিছু দূরেই রয়েছে আদানি গ্রুপ্রের কাট্টুপাল্লি বন্দর। যার ফলে দিনের পর দিন ধরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই এলাকার সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে গোটা জীবজগত। ওই অঞ্চলের মৎস্যজীবীরা এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবার ওই বন্দরের আরও সম্প্রসারণের খবর তাঁদের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ করেছে সাধারণ পরিবেশপ্রেমী মানুষদেরও।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের Envioronment Impact Assessment (EIA)-এ আদানি গ্রুপের তরফে তামিলনাড়ু সরকারের কাছে তাঁদের কাট্টুপাল্লি বন্দর এলাকা ৩৩০ একর থেকে বাড়িয়ে ৬১১১ একর করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ঘনিষ্ঠ আদানি গোষ্ঠীর বন্দরের এই মারাত্মক সম্প্রসারণে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে। বন্দরের সম্প্রসারণের ফলে ওই এলাকার সামুদ্রিক জীবজগৎ ও সৈকতের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের কাছে তাঁদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।
ডিএমকে তাঁদের শেষ নির্বাচনী ইস্তেহারে রাজ্যের মানুষকে আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশ্যাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড (APSEZ)-এর সহায়ক কোম্পানি ম্যারিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের বন্দর সম্প্রসারণ কঠোর হাতে বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখন আন্দোলনকারীরা মুখ্যমন্ত্রী ও শাসকদলকে তাঁদেরই দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করার দাবি জানিয়েছেন। আদানি গ্রুপের এই বন্দর সম্প্রসারণ লক্ষ লক্ষ মানুষ ও স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি করবে বলে জানিয়েছেন প্রতিবাদী বিশিষ্টরা। প্রতিবাদীদের মধ্যে রয়েছেন পরিবেশকর্মী দিশা রবি, সঙ্গীতশিল্পী টিএম কৃষ্ণা, বলিউড অভিনেত্রী দিয়া মির্জা-সহ আরও অনেকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন