মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আর হাতে গোনা কয়েকমাস বাকি। তার আগে ব্লক স্তরের নেতা থেকে প্রাক্তন সাংসদ, অনেকেই বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি নেতাও গেরুয়া শিবির থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন।
বুধবার শিবরাজের বুধনি কেন্দ্রের এক প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ এবং এক পঞ্চায়েত প্রধান কংগ্রেসে যোগ দিলেন। একে একে সৈনিকরা দল ছেড়ে বিরোধীপক্ষে শামিল হওয়ায় ভোটের আগে বিপদ বাড়ছে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের।
বুধবার ভোপালে এক দলীয় অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন আদিবাসী নেতা-সহ হাজারেরও বেশি সমর্থক নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান রাজেশ প্যাটেল যোগ দেন কংগ্রেসে। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কমল নাথ নিজে তাঁকে দলে অভ্যর্থনা জানান। প্রসঙ্গত, বুধনি কেন্দ্রের ছাপড়ি অঞ্চলের পঞ্চায়েত প্রধান রাজেশ প্যাটেলের বাবা শ্রীরাম প্যাটেল ছিলেন একজন জনসংঘ কর্মী। গোটা প্যাটেল পরিবার মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংয়ের বেশ ঘনিষ্ঠ বলেই জানা গিয়েছে। এমনকি প্যাটেল পরিবারের সদস্যরা এর আগেও বিজেপির মদতে তিনবার ওই ছাপড়ি অঞ্চলে পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। শিবরাজ নিজেও ২০০৫ সালে বুধনি কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
রাজেশ প্যাটেল ছাড়াও বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ বোধ সিং ভগত এদিন কমল নাথের উপস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, “কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অত্যন্ত প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও ভারত জোড়ো যাত্রায় নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিয়েছেন। আমি তাতেই উদ্বুদ্ধ হয়েছি।” প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হীনা কৌরেকে ৯৬,০৪১ ভোটে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন বোধ সিং।
বোধ সিং এদিন মধ্যপ্রদেশ বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যে ভেজালের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে অভিযোগ করেন। তিনি জানান, “বিশেষ করে রাজ্যের আদিবাসী এলাকাগুলিতে ভেজাল জিনিসপত্র সর্বত্র ছড়িয়ে গিয়েছে। ফসলের বীজ, সার, ওষুধপত্র – সবই জাল। বিজেপির অন্দরমহলে আমি এই বিষয়টি তুলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে পাত্তা না দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।” কংগ্রেসে তাঁর পদ ও দায়িত্ব নিয়ে বোধ সিং জানিয়েছেন, “আমি এখানে কিছুই চাইছি না, আমার কোনও দাবি নেই। দল আমাকে যা দায়িত্ব দেবে আমি তাই পালন করব।”
এদিনের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ বলেন, “রাজ্যে দুর্নীতির শেষ নেই। রাজ্যের মানুষ প্রায় প্রত্যেকেই হয় দুর্নীতির শিকার হয়েছেন বা কাউকে হতে দেখেছেন। আসলে এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছে যা টাকার বদলে যেকোনো কাজ করিয়ে নেয়। সেই জন্য আজকে কৃষকরাও ফসলের সার ও বীজে ভেজালের শিকার হচ্ছেন।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন