রাজনৈতিক দলগুলি কাদের থেকে কীভাবে অনুদান পাচ্ছে, দলগুলির কোষাগারে কোত্থেকে আসছে বিপুল পরিমাণ টাকা, তা জানার কোনও অধিকার নেই দেশের সাধারণ মানুষের। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতে এমনটাই জানালো কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টে রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদানের জন্য নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা মামলার শুনানির আগে কেন্দ্রের তরফে এই কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমণি।
এদিন সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের সামনে ভেঙ্কটারমণি জানান, রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পটি বিশেষ অবদান রাখে। কিন্তু এই প্রকল্পটি কোনও ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করে না। বিদ্যমান অধিকার লঙ্ঘন করে না। তাই সংবিধানের ১৯(১)(এ) ধারার আওতায় এই বিষয়ে কোনও তথ্য জানার অধিকার সাধারণ নাগরিকের নেই।
এদিন ভেঙ্কটারমণি আরও জানান, ২০০৩ সালে পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ মামলায় একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়ার আগে ভোটারদের সুবিধার্থে প্রার্থীদের তাঁদের ‘অপরাধমূলক ইতিহাস’ ঘোষণা করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। প্রার্থী পছন্দের ক্ষেত্রে একজন প্রার্থীর অপরাধমূলক ইতিহাস জানা যথেষ্ট প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, কিন্তু তার সঙ্গে বর্তমান মামলার তুলনা করা যায় না। নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পটি তহবিলকারীদের গোপনীয়তার সুবিধা প্রদান করে থাকে। তাই সাধারণ মানুষ এই বিষয়ে সবকিছু জানার অধিকার রাখেন না।
৩১ অক্টোবর অর্থাৎ আজ রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদানের জন্য নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানির আগে কেন্দ্রের তরফে এই বন্ড নিয়ে যুক্তি দেওয়া হল। বুঝিয়ে দেওয়া হল, শীর্ষ আদালত যেন এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড নীতি চালু করে মোদী সরকার। কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, নির্দিষ্ট মূল্যের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হবে। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যায়। দল সেই বন্ড ভাঙিয়ে নেবে। নিয়ম অনুযায়ী বন্ডদাতার পরিচয় গোপন রাখা হয়। গত ৫ বছরে বন্ডের মাধ্যমে যে অর্থ এসেছে তার ৯০ শতাংশ ঢুকেছে বিজেপির কোষাগারে। এই বন্ডের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে সিপিআইএম সহ চারটি সংস্থা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন