ব্যাঙ্গালুরুর বিভিন্ন জায়গায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে নিয়ে ‘অপমানজনক’ পোস্টার লাগানো নিয়ে বিহারের বিজেপির সঙ্গে জোর সংঘাত লাগল কংগ্রেসের। শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় বিহারের সুলতানগঞ্জের ব্রিজ ভাঙা নিয়ে নীতিশকে আক্রমণ করে পোস্টার লাগানোর অভিযোগ ওঠে। পোস্টারে নীতিশকে ‘ভারসাম্যহীন প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী’ বলেও আক্রমণ করা হয়েছে। পরে ব্যাঙ্গালুরু পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে সেই পোস্টারগুলি সরিয়ে দিলেও কংগ্রেসশাসিত কর্ণাটকে নীতিশের নামে এধরণের পোস্টার লাগানো নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তুমুল বিবাদে জড়িয়েছে বিহার বিজেপি।
মঙ্গলবার এই নিয়ে বিহারের বিজেপি সভাপতি সম্রাট চৌধুরী জানিয়েছেন, “কর্ণাটকে যে কংগ্রেস সরকারের শাসন চলছে, এটা তাঁদেরই হস্তশিল্প। কিন্তু তাঁরা এটা কখনই স্বীকার করবেন না কারণ নীতিশ কুমার এখন তাঁদেরই জোটসঙ্গী।” পাশাপাশি, বিজেপির প্রাক্তন জোটসঙ্গী নীতিশ কুমারের ‘প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন’কে কংগ্রেস কখনই ভালো চোখে দেখবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। কারণ, তাঁর দাবি কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করতে চায়। যদিও মঙ্গলবারের বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য কোনও দাবি করবে না কংগ্রেস। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য কোনও প্রার্থীকে দাঁড় করাবে না কং। এই পোস্টার বিতর্কে ‘নীতিশ কুমার নিজেই নিজের অপমানের জন্য দায়ী’ বলে দাবি করেছেন বিহার বিজেপির সভাপতি।
প্রসঙ্গত, এককালের বিজেপির জোটসঙ্গী নীতিশ কুমারের জেডিইউ মাত্র এক বছর আগেই গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক শেষ করে বিজেপি বিরোধী মহাজোটে যোগ দিয়েছেন। এমনকি নীতিশই নিজে থেকে উদ্যোগ নিয়ে গত ২৩ জুন পাটনায় মহাজোটের প্রথম বৈঠকের আয়োজন করেন। বিহার বিজেপির এই বেলাগাম আক্রমণকে পাল্টা দিয়েছে কংগ্রেসও।
এক বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা এই নিয়ে জানিয়েছেন, “বিরোধীদের অপমান করার জন্য বিজেপিই সর্বপ্রথম এই ‘পোস্টারবাজি’ শুরু করেছে। এভাবেই ওরা বিরোধী জোটের মধ্যে ভাঙন ধরাতে চায়। আসলে বিরোধী ঐক্য যেভাবে আকার পাচ্ছে তাতে বিজেপি মনে ভয় ধরেছে আর ওরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। গত মাসে পাটনার বৈঠকে এক ডজনেরও বেশি বিরোধী দল যোগ দিয়েছিল। সেখানে ব্যাঙ্গালুরুতে সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬।” ওই কং নেতা আরও জানিয়েছেন, “২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপি মাত্র ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছিল। কারণ, বাকি ৬২ শতাংশ ভোট বিভিন্ন দলের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যায়।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন