কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার দৌড় থেকে বাদ পড়লেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। সম্প্রতি, তাঁর অনুগত ৯২ জন বিধায়ক দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণার পরেই, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। জানা যাচ্ছে, অশোক গেহলটের জায়গায় এই পদের জন্যে নামতে পারেন মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং দিগ্বিজয় সিং।
সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-র মাঝে পার্টিকে বিব্রত করেছে রাজস্থানের পরিস্থিতি। অনুগত বিধায়কদের মাধ্যমে 'বিদ্রোহের ষড়যন্ত্র' করার জন্য অশোক গেহলটের উপর ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতৃত্ব। গান্ধী পরিবারের অনুগত হলেও, গেহলটের রাজস্থান মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে অস্বীকার করার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি কংগ্রেস।
কেননা, এই ঘটনার আগে কংগ্রেসের ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি মেনে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে সম্মত হয়েছিলেন গেহলট। কিন্তু, রবিবার ও সোমবারের ঘটনা মুখ পুড়িয়েছে কংগ্রেসের।
কী ঘটেছে? রবিবার সকাল পর্যন্ত ঠিক ছিল, গেহলটের ছেড়ে যাওয়া আসনে বসবেন তাঁরই চির প্রতিদ্বন্দ্বী সচিন পাইলট। সেইমতো সন্ধ্যায় জয়পুরে গেহলটের কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠক ডাকা হয়। এইক্ষেত্রে বৈঠকের জায়গা এবং দিনক্ষণ ঠিক করেন গেহলট নিজেই। সময়মতো, রবিবার রাতে বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলতে পৌঁছে যান রাজস্থান কংগ্রেসের ইনচার্জ অজয় মাকেন এবং পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খার্গে।
কিন্তু, এই বৈঠকে মাত্র ২০-২২ জন বিধায়ক গেহলটের বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। বেশিরভাগ কংগ্রেস বিধায়ক গেহলটের ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়ালের বাড়িতে আলাদা বৈঠক করেন।
সেই বৈঠকের পরে, তাঁরা স্পিকারের বাড়িতে গিয়ে পদত্যাগ করার হুমকি দেয়। রাজস্থানের মন্ত্রী প্রতাপ সিং কাচারিয়াস বলেন, ‘বিধায়করা চান শচীন পাইলটের পরিবর্তে তাঁদের পছন্দের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হোক।’
একইসঙ্গে, দুই কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে আলাদা করে দেখা করতে অস্বীকার করেন বিধায়করা। তাঁরা প্রকাশ্যে দলের সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশকে অমান্য করে শর্ত দেন যে, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের পরেই রাজ্যে নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করা হোক।
তবে, অজয় মাকেন বলেন, ‘এটি স্বার্থের সংঘাত হতে পারে। কারণ অশোক গেহলট দলীয় প্রধান (সভাপতি) হতে পারলে রাজস্থানের নতুন মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে প্রস্তাব পাস করা হবে। রাজস্থানে নিজের উত্তরসূরী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন তিনি।’ তাই, বিধায়কদের দাবি মানেনি কংগ্রেস। আর, অনুগত বিধায়কদের বিদ্রোহের জেরে সভাপতি নির্বাচন থেকে ছিটকে গিয়েছেন গেহলট।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন