মোদীর 'শ্বেতপত্র' (White Paper) প্রকাশের আগেই 'কৃষ্ণপত্র' (Black Paper) প্রকাশ করলো কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে কৃষ্ণপত্র প্রকাশ্যে আনেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। গত ১০ বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়েছে ওই পত্রে।
কৃষ্ণপত্র প্রকাশ করে মল্লিকার্জুন খাড়গে জানান, 'এই কৃষ্ণপত্রে আমরা মূলত ভারতের বেকারত্ব তুলে ধরেছি। যে বিষয়ে মোদী সরকার বেশী আলোচনা করে না। এছাড়া অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে ওই পত্রে। কেন্দ্র অ-বিজেপি রাজ্যগুলিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করছে না। তার বদলে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে রাজ্যগুলি কেন্দ্র থেকে পাঠানো টাকা খরচ করতে পারেনি'।
তিনি আরও বলেন, "এই সরকারের আমলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার ইন্দিরা গান্ধী এবং জওহরলাল নেহেরুর আমলের সাথে মুদ্রাস্ফীতি তুলনা করে। বিজেপি এটা ভুলে যাচ্ছে যে তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সরকার চালাচ্ছে। তাই অতীতের সাথে তুলনা চলে না। বিজেপি সরকারই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে কৃষকদের এমএসপি বৃদ্ধি করবে। চাষীদের আয় দ্বিগুণ করবে। কিন্তু বাস্তবে কী হয়েছে? সংসদে এর কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি।"
রিপোর্টটি ৩টি ভাগে বিভক্ত: আর্থিক অন্যায়, সামাজিক অন্যায় এবং রাজনীতিক অন্যায়।
আর্থিক অন্যায়: এই বিভাগটিতে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, নোটবন্দীকরণ এবং জিএসটি-এর মতো "অর্থনৈতিক ভুল" নিয়ে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান শাসনামলে কৃষকদের দুর্দশা, প্রকৃত কর্মসংস্থানের পরিবর্তে চুক্তি ভিত্তিক কর্মসংস্থানের উপর সরকারের নির্ভরতা নিয়ে বলা হয়েছে।
সামাজিক অন্যায়: এই বিভাগে মহিলা, এসসি/এসটি, ওবিসি নাগরিক এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও অপরাধ বৃদ্ধি এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক বক্তব্যের উত্থান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
রাজনীতিক অন্যায়: রিপোর্টের এই অংশে ভারতের রাজনৈতিক কাঠামো এবং প্রতিষ্ঠানিক ক্ষয় সম্পর্কে বলা হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিচার বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশনের মতো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিজেদের দখলে নিয়েছে কেন্দ্র সরকার।
প্রসঙ্গত, বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে বলা হয় বাজেট অধিবেশনের শেষে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ আমলের আর্থিক দুর্নীতি তুলে ধরে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। যার কারণে অধিবেশনে নির্ধারিত সময় থেকে অতিরিক্ত একদিন বৃদ্ধিও করা হয়। বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার অর্থাৎ ৯ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু অতিরিক্ত দিনের জন্য শেষ হবে শনিবার। শেষদিন এই শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে পারেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। যার পাল্টা কৃষ্ণপত্র প্রকাশের কথা জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন