রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এ যোগ দিয়েছেন আসামের তিন কলেজের অধ্যক্ষ। এই নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে অন্যান্য ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিউজক্লিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি এবিভিপি-এর তরফে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, জোরহাটের জেবি কলেজ, লখিমপুরের নর্থ লখিমপুর কলেজ এবং শিলচরের গুরুচরন কলেজের প্রিন্সিপালরা ওই ছাত্র সংগঠনে যোগ দিয়েছেন। এই ছবি সামনে আসার পরেই ওই তিন অধ্যক্ষের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
এই নিয়ে আসামের “রাইজর” দলের প্রধান তথা শিবসাগরের বিধায়ক অখিল গগৈ জানিয়েছেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষরা কীভাবে একটি রাজনৈতিক দলের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন? পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে এটি আসলে স্বার্থের সংঘাত।” তিন কলেজের অধ্যক্ষদের এবিভিপি-তে যোগদানকে তিনি ‘গভীর উদ্বেগ’-এর কারণ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।
অন্যদিকে, আসাম তৃণমূলের যুব সভাপতি বন্দিত দত্ত জানিয়েছেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষদের থেকে যে নিরপেক্ষতা আশা করা যায়, এই ঘটনা সেই নিরপেক্ষতাকে লঙ্ঘন করেছে। সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বা অধ্যাপকরা কীভাবে কোন রাজনৈতিক দলের সংগঠনের সভাপতি পদে বসতে পারেন? রাজ্যে এসব কী হচ্ছে? রাজ্য সরকার কি এগুল দেখতে পাচ্ছে না?” ওই তিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের নির্বাচনী সীমা ও কেন্দ্রের সীমানা পুনরায় নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে কয়েকদিন আগেই নিজের পদ থেকে বরখাস্ত হতে হয়েছিল চূড়াচাঁদপুরের ভবানীপুর আঞ্চলিক কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ মুকুন্দ শর্মাকে। সেই ঘটনার পর এবার তিন অধ্যক্ষের এবিভিপি-তে যোগ দেওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখানোয় এক অধ্যক্ষকে বরখাস্ত হতে হলে রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনে যোগ দেওয়ায় ওই তিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না কেন?
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন