বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন আসামীকে মুক্তি দিয়েছে বিজেপি শাসিত গুজরাট সরকার। জেল থেকে মুক্ত আসামীদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে। এ নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়েছে।
এরইমাঝে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। পারিবারিক অনুষ্ঠান এবং পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য বারে বারে প্যারোল বা অস্থায়ী জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন আসামীরা। বেশ কয়েকবার তারা জামিন পেয়েছে, আবার কখনও তারা আদালত থেকে জামিন পায়নি। তবে, এই মামলায় সরকারী সাক্ষীরা জানিয়েছেন, আসামীরা জেল থেকে বাইরে বের হলেই তাঁদের কাছে হুমকি আসতো। সেকথা তাঁরা কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছেন।
জানা যাচ্ছে, আসামীদের জামিনের ক্ষেত্রে কিছু আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিল আদালত। কারণ হিসাবে আদালত জানায়, প্যারোলের ছুটি ‘উপভোগ করত’ আসামীরা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আদালতে ২৮ দিনের প্যারোল চেয়েছিলেন ১১ জন আসামীদের অন্যতম রাধেশ্যাম শাহ (Radheshyam Shah)। কিন্তু, তাঁর এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিল গুজরাট হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এস সুপেহিয়া বলেন, ‘২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত, একটানা ৬০ দিন প্যারোলে ছুটি কাটিয়েছেন শাহ। তাঁকে এখনই নতুন করে প্যারোল দেওয়া সম্ভব নয়।’
এর আগে, ২০১৯ সালের মে মাসে, অন্যতম আসামী কেশর ভোহানিয়া (Keshar Vohania) তাঁর ছেলের বিয়ের জন্য প্যারোল চেয়েছিলেন। কিন্তু, গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি উমেশ ত্রিবেদী তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ হিসাবে বিচারপতি জানান, ইতিমধ্যেই (২০১৮ সালের আগস্ট মাস থেকে ২০১৯ মার্চ মাসের মধ্যে) ৯০ দিন প্যারোলে ছুটি কাটিয়েছেন ভোহানিয়া।
গুজরাটের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদীপসিংহ জাদেজার (Pradeepsinh Jadeja) কাছে একাধিক চিঠি লিখেছিলেন এই মামলার সঙ্গে যুক্ত সাক্ষীরা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাদেজাকে চিঠি লিখেছিলেন বিলকিস বানো মামলার অন্যতম সাক্ষী ও রন্ধিকপুরের বাসিন্দা আব্দুল রাজ্জাক মনসুরি (Abdul Razzak Mansuri)।
যে চিঠিতে মনসুরি জানান, ‘জেলের বাইরে থাকা সময়কে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করছেন অভিযুক্তরা। এমনকি, এই সময়কে তাঁরা ব্যবসা চালানো, তাদের বাংলো তৈরি করা এবং সাক্ষীদের হুমকি দেওয়ার কাজেও ব্যবহার করছে।’
মানসুরি অভিযোগ করেন, 'এই মামলার আসামী শৈলেশ ভাট (Shailesh Bhatt) প্যারোলে মুক্ত থাকাকালীন ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল। এবং দাহোদ থেকে বিজেপির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সাথে মঞ্চে ছিলেন।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন