রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে যে পরিমাণ মূলধন জোগান দিচ্ছে কেন্দ্র, তার তুলনায় কর্পোরেট থেকে অনাদায়ী ঋণ মকুবের অংক বেড়ে চলেছে। এই পার্থক্য প্রায় তিন গুণ। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণের হার কমেছে। রিজার্ভ ব্যাংক দায়ের হওয়া তথ্য জানার অধিকার আইনে এইরকমই তথ্য সামনে এসেছে।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় গত চার বছরে কর্পোরেটের ঋণ মকুবের হার বেড়েছে। নরেন্দ্র মোদি সরকার যে পরিমাণ মূলধন জোগান দিচ্ছে তার তিনগুন পরিমাণ ঋণ কর্পোরেটের ক্ষেত্রে মকুব হচ্ছে। কর্পোরেটকে একপ্রকার ভর্তুকি বিলি করা হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে মূলধনের জোগান ছিল ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। একই সময় ব্যাংকের কর্পোরেট ঋণ মুকুব হয়েছে মূলধন জোগানের প্রায় তিনগুণ। ২০১৪-২০২১ মোট ঋণ মকুবের পরিমাণ ৮.১৭ লক্ষ কোটি টাকা।
২০১৮-১৯ সালে সর্বাধিক ঋণ মকুব করা হয়েছিল। সর্বাধিক মূলধন জোগানও সেই বছরই হয়। রিজার্ভ ব্যাংক আরটিআইয়ের জবাবে জানিয়েছে, গত চার বছরে সর্বাধিক ঋণ মুকুব করা হয়েছে। গড়ে প্রতি বছর এক লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মকুব হয়েছে। ঋণ মকুবের ফলে রেকর্ড হারে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ কমেছে। মোদি জমানায় কর্পোরেট ঋণ মকুবের পরিমাণ বাড়তে থাকায় ঋণের পরিমাণ কমতে থাকে। এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের তুলনায় কর্পোরেট বেসরকারি ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণ মকুবের পরিমাণ খুবই কম।
আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। কিন্তু মোদি সরকারের নীতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ঋণ বিলি থেকে ঋণ মকুবে কর্পোরেট আধিপত্য ক্রমশ বেড়ে চলায় ব্যাংক আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। মোদি সরকার মহামারীতে প্রচুর বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিলেও মূলধনের অভাবে এবং ঝুঁকি বেড়ে যাওয়াতেই শিল্পে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বিনিয়োগ ক্রমেই কমে চলেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন