হরিয়ানার সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় মনু মানেসর নামে এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। যিনি বজরং দলের সদস্য তথা একটি স্বঘোষিত গো-রক্ষা সংগঠনের মুখ্য নেতা। তাঁর আসল নাম মোহিত যাদব। সোমবার থেকে হরিয়ানার নুহ এবং গুরুগ্রাম জেলায় যে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ছড়িয়েছে তার পিছনে মনুর মুখ্য ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-এর তরফে করা যে ধর্মীয় মিছিলকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়িয়েছে, দুই পুলিশকর্মী সহ ৫ জনের মৃত্যু এবং দুই শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সেদিনের মিছিলে মনু মানেসরকেও দেখা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সমাবেশের আগে মনু নিজেই সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্টে ওই মিছিলে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।
কে এই মনু মানেসর? হরিয়ানা ও রাজস্থানে স্বঘোষিত গো-রক্ষক হিসেবে বজরং দলের বিভিন্ন কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন এই মনু মানেসর। গত ফেব্রুয়ারিতে রাজস্থানে তাঁর বিরুদ্ধে দুই মুসলিম ব্যক্তিকে গরু পাচারকারী সন্দেহে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে। ৩০ বছর বয়সী এই হিন্দুত্ববাদী নেতা কলেজে থাকতেই বজরং দলে যোগ দেন।
২০১৯ সালে গরু পাচারকারীদের তাড়া করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই প্রচারের আলোয় উঠে আসেন মনু। ২০১৫ সালে গো-রক্ষা আইন প্রণয়ন হলে হরিয়ানা সরকারের তরফে একটি জেলা পর্যায়ের গো-রক্ষাকারী বিশেষ দল তৈরি করা হয়। সেই দলেও সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন এই মনু। পাশাপাশি, ‘লাভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধেও তিনি স্বঘোষিত ভাবে প্রচার করে থাকেন।
সম্প্রতি হরিয়ানার নুহতে ভিএইচপি-এর পক্ষ থেকে এক ধর্মীয় মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। মনু নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভিডিও বার্তায় সেই মিছিলে যোগ দেওয়ার কথা জানান। পাশাপাশি, তার অসংখ্য অনুগামীদেরও ওই মিছিলে অংশগ্রহণ করার বার্তা দেন।
যদিও পরবর্তীতে ভিএইচপি-এর তরফে মনুকে ওই মিছিলে যোগ না দেওয়ার অনুরোধ করে জানানো হয়, ওই মিছিলে মনুর উপস্থিতি হিংসা ছড়ানোয় মদত দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত ওই মিছিলে তাঁর উপস্থিতি ও সন্ত্রাসের আগুনে ঘি ঢালার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ থাকলেও, হরিয়ানার বিভিন্ন জেলায় তাঁর মারাত্মক প্রভাব রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন