সঙ্কটে হরিয়ানার বিজেপি সরকার। কারণ সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিলেন তিন নির্দল বিধায়ক। শুধু তাই নয়, এবার থেকে তাঁরা কংগ্রেসকে সমর্থন করবেন বলেও জানিয়েছেন।
ওই তিন বিধায়ক হলেন - রণধীন গোলান (পান্ডুরি), ধর্মপাল গোন্ডার (নিলোখেরি) এবং সোমবীর সিংহ সঙ্গওয়ান (দাদরি)। কংগ্রেস নেতা এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডার উপস্থিতিতে মঙ্গলবার বিকেলে রোহতকে সম্মিলিতভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে হরিয়ানার নায়েব সিং সাইনি সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেন তাঁরা। সঙ্গওয়ান জানান, তাঁদের সঙ্গে বাদশাপুরের নির্দল বিধায়ক রাকেশ দৌলতাবাদও রয়েছেন। রাস্তায় আটকে পড়ায় সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি।
বিধায়করা দাবি করেছেন, নায়েব সিং সাইনির সরকার এই মুহূর্তে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। শীঘ্রই রাজ্য নির্বাচন হওয়া উচিত। এই নির্বাচনে তাঁরা কংগ্রেসকে সমর্থন করবেন বলেও জানিয়েছেন।
ভূপিন্দর সিং হুডা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, হরিয়ানায় বিজেপির ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই। কারণ বিজেপি সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। জনগণের অনুভূতির কথা মাথায় রেখে তিন নির্দল বিধায়ক কংগ্রেসকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন। ওই তিনজনকে ধন্যবাদ। আমজনতার পাশাপাশি যারা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বা সমর্থন করেন তারাও এই সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট। অবিলম্বে এই সরকার ভেঙে দেওয়া উচিত এবং রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা করা উচিত।“
মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সাইনি অবশ্য এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন না। দুমাস আগে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেন মনোহর লাল খট্টার। সেই সময় রাজ্যে বিজেপির সাথে জোটে থাকা জেজেপি-ও সরকারের উপর থেকে তাদের সমর্থন তুলে নেয়। এরপর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সাইনি। নির্দল বিধায়কদের সমর্থন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে সাইনি সরকার।
বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সাইনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, “আমি বিষয়টা শুনেছি। কংগ্রেস এভাবে তাদের ইচ্ছে পূরণ করার চেষ্টা করছে। প্রত্যেকেরই একটি ইচ্ছা আছে তো। কিন্তু জনগণ জানে। তারা জানে যে কংগ্রেস জনগণের জন্য কিছু করে না, তারা শুধুমাত্র তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা পূরণ করে।“
তবে বিজেপি কিভাবে নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে সেই বিষয়ে কিছু বলেননি সাইনি।
উল্লেখ্য, ৯০ সদস্য বিশিষ্ট হরিয়ানা বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন ৪৬ জন বিধায়কের সমর্থন। বর্তমানে দুটি আসন খালি রয়েছে। তাই ম্যাজিক ফিগার ৪৫। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৪০। এতদিন ছয় নির্দল বিধায়ক এবং জেজেপি-র ১০ বিধায়কের সমর্থন ছিল। জেজেপি আগেই সমর্থন তুলে নিয়েছে। ছয় নির্দল বিধায়কের মধ্যে ৪ জন সমর্থন তুলে নিলে ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারবে না বিজেপি।
অন্যদিকে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ৩০। এছাড়াও জেজেপি-র ১০ এবং আইএনএলডি-র একজন বিধায়ক তাদের সমর্থনে আছে। এর উপর চার নির্দল বিধায়ক কংগ্রেসকে সমর্থন করলে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবে কংগ্রেস।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন