সম্প্রতি তপসিলি জাতি এবং জনজাতির সংরক্ষণ নিয়ে রায় ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ের বিরোধিতা করে বুধবার ভারত বনধের ডাক দিয়েছে ন্যাশনাল কনফেডারেশন অফ দলিত অ্যান্ড আদিবাসী সংস্থা (এনএসিডিএওআর)। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, চন্দ্রশেখর আজাদের ভীম সেনা-সহ একাধিক দল এই বনধকে সমর্থন জানিয়েছে।
বুধবার সকাল থেকে এই বনধের সবথেকে বেশী প্রভাব পড়েছে বিহারে। বিহারের দ্বারভাঙা ও আরাতে ট্রেন আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। জাহানাবাদ, সহরসা ও পূর্ণিয়া জেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একাধিক জাতীয় সড়ক। পুলিশের সঙ্গে বনধ সমর্থকদের ধস্তাধস্তি হয় বিভিন্ন জায়গায়। যার জেরে পুলিশ ৫ জনকে আটক করেছে।
বিহার ছাড়াও বনধের প্রভাব পড়েছে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কেরল সহ দেশের একাধিক রাজ্যে। জানা যাচ্ছে, বনধের কারণে রাজস্থানের জয়পুর, ভরতপুর, মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র-সহ একাধিক রাজ্যে স্কুল-কলেজ ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। একাধিক শহরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। দলিত এবং আদিবাসী সংগঠনের দাবি, সুপ্রিম কোর্টকে এই রায় প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি, কেন্দ্রের কাছে তাঁদের আবেদন, সরকার যেন শীর্ষ আদালতের রায় গ্রহণ না করে।
ভারত বনধের কারণে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।
এনএসিডিএওআর অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে তপসিলি জাতি এবং উপজাতিদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব হয়। সেই কারণে অবিলম্বে জাত-ভিত্তিক তথ্য প্রকাশের দাবি তুলেছেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টকে অবিলম্বে এই রায় প্রত্যাহারের দাবি-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই রায় প্রত্যাখানের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি, নতুন আইন প্রণয়নের কথাও জানিয়েছেন এনএসিডিএওআর।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলার রায়ে জানায়, তপসিলি জাতি এবং জনজাতির মধ্যে যাঁরা আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল, তাঁদের সংরক্ষণ বাতিল করে দেওয়া হোক। তার পরিবর্তে তফসিলি জাতি এবং জনজাতি সমাজের আর্থিক সিঁড়িতে যাঁরা একেবারে নীচে রয়েছেন, সেই অতি পিছিয়ে পড়া অংশকে চিহ্নিত করে তাঁদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হোক। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়-সহ সাত সদস্যের বেঞ্চের মধ্যে ছ’জন ‘কোটার মধ্যে কোটা’-র পক্ষে রায় দেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন