ফের এক দলিতকে খুন করার অভিযোগ উঠলো তথাকথিত উঁচু জাতির বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ড। অভিযোগ, উঁচুজাতের কন্যাকে বিয়ে করায় খুন করা হয়েছে ৩৯ বছর বয়সী এক দলিত নেতাকে, যা নিয়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডের আলমোড়া জেলায় ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত ব্যক্তির নাম জগদীশ চন্দ্র। মহকুমা শাসক শিপ্রা যোশী জানান, "জগদীশের পরিবারের তরফ থেকে তাঁর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জানানো হয়েছিল। এরপর তল্লাশিতে নামে পুলিশ। জানা গেছে, জগদীশকে বিকেল ৫ টায় ভিকিয়াসেন এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। পরে তাঁকে খুন করা হয়। ঐ নেতা সম্ভবত নিজের কোনও কাজের জন্য ওখানে গিয়েছিলেন। চিরুনী তল্লাশির পর পুলিশ রাত ১০ টার দিকে দলিত নেতার দেহের সন্ধান পায়। তাঁর দেহ রাখা ছিল একটি গাড়িতে।"
জগদীশের স্ত্রীর পরিবার এই ঘটনার জন্য দায়ী বলে অনুমান পুলিশের। মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, জগদীশের স্ত্রীর সৎ বাবা যোগা সিং, সৎ ভাই গোবিন্দ সিং-র বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা ও তপশিলী জাতি ও উপজাতি আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।"
ময়নাতদন্তের পর জগদীশের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। নিহতের দেহে অন্ততপক্ষে ২৫ টি গভীর ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। দলিত নেতার হাতও ভেঙে দেওয়া হয়।
জগদীশের বাবা জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। আলমোড়া জেলাতে এক মন্দিরে তাঁদের বিয়ে হয়। তবে গীতার (জগদীশের স্ত্রী) বাবা ও দাদার প্রথম থেকেই বিয়েতে আপত্তি ছিল। ওরাই খুন করেছে জগদীশকে।
নিহত জগদীশ চন্দ্র ২০২১ সালের আগস্ট মাসে বিয়ে করেছিলেন উঁচুজাতের গীতা সিং-কে। উত্তরাখণ্ডের একটি আঞ্চলিক দল উত্তরাখণ্ড পরিবর্তন পার্টির নেতা ছিলেন জগদীশ। দলের সভাপতি পিসি তিওয়ারি বলেন, জগদীশ নেতা হিসেবে খুবই সক্রিয় ছিলেন। দু’বার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন।
উল্লেখ্য, দলিত হত্যা যেন নিত্ত-নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে দেশে। সম্প্রতি প্রকাশিত ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যানেও এই তথ্য উঠে এসেছে। দলিতদের উপর হওয়া অত্যাচারের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন