ভয়াবহ পরিস্থিতি রাজধানী নয়াদিল্লির। বৃহস্পতিবার বন্যা কবলিত দিল্লির স্কুল ও অফিস কাছারি নিয়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নিল অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রশাসন। এদিনই আগামী রবিবার পর্যন্ত রাজধানীর সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আপ সরকার। পাশাপাশি, একাধিক অফিসও বন্ধ রেখে কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টির সাক্ষী থাকছে দেশের বেশ কিছু রাজ্য। যেমন শুধুমাত্র রাজধানী দিল্লি নয়, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যেরও রেকর্ড পরিমাণ লাগামছাড়া বৃষ্টিতে নাজেহাল দশা। বিপদসীমার বহু উপর দিয়ে বইছে যমুনা। নয়াদিল্লির বিভিন্ন রাজপথ এই মুহূর্তে জলের তলায়।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকে বসেছিল শহরের প্রশাসন ও দিল্লি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (ডি ডি এম এ)। বৈঠক শেষে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “দিল্লির লেফটেন্যান্ট এস.কে সাক্সেনার প্রতিনিধিত্বে ডিডিএমএ-এর একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
আপ সুপ্রিমো জানিয়েছেন, “বৈঠক চলাকালীনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগামী রবিবার পর্যন্ত দিল্লির সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হবে। এছাড়াও খুব বেশি প্রয়োজনীয় নয় এমন সরকারি দফতর ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে আপাতত বন্ধ রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আপনারা কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিতে পারেন।” মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, “বন্যার জন্য শহরের তিনটি জলের প্লান্ট আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দিল্লির বাসিন্দারা আগামী দু-একদিন পানীয় জলের সরবরাহ নিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন।”
এছাড়াও জরুরীকালীন পরিষেবার গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও ভারী গাড়ির এই মুহূর্তে দিল্লিতে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি আপ নেতা আরও জানিয়েছেন, “ত্রাণ শিবিরগুলিতে টয়লেট ও বাথরুম নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তাই শিবিরগুলিকে স্কুলে স্কুলে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।”
গত ৪৫ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়ে যমুনা নদীর জলস্তর বৃহস্পতিবার সকালে ২০৮.৪ মিটারে উঠেছে, যা বিপদসীমার অনেকটাই উপরে। এই ঘটনার খবর প্রশাসনের কাছে যাওয়ার পরেই তড়িঘড়ি আজকের বৈঠক ডাকা হয়। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, দিল্লির লেফটেন্যান্ট তথা দিল্লি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান এস.কে সাক্সেনা এবং দিল্লি প্রশাসনের কয়েকজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১২টি দলকে শহরে মোতায়েন করা হয়েছে এবং প্রায় ১৬ হাজার মানুষকে বিপজ্জনক অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন