রাজধানীর সবচেয়ে ব্যস্ততম রাজপথ আজ জলের তলায়। দিল্লির রিং রোড সংলগ্ন গোটা এলাকায় থৈ থৈ করছে যমুনার জল। তবে শুধু ওই একটি এলাকাই নয়, প্রবল বৃষ্টিতে যমুনার জল ঢুকে দেশের রাজধানী শহরের অধিকাংশ অঞ্চলকেই স্তব্ধ করে দিয়েছে। বন্ধ হয়ে রয়েছে দিল্লির পরিবহণ ব্যবস্থার হৃদপিণ্ড মেট্রো পরিষেবা। একাধিক জায়গায় ভেঙে পড়েছে নিকাশি ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার দিল্লির রিং রোডের নর্দমার একটি রেগুলেটরে বেশ বড় ফাটল ধরেছে বলে জানা গিয়েছে। গতকাল সন্ধ্যের পর থেকে ওই ফাটল দিয়ে হুড়মুড়িয়ে যমুনার জল ঢুকছে শহরে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছেন।
দিল্লি প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ দিল্লির রিং রোডের নিকাশি ব্যবস্থার লাইনে ইন্দ্রপ্রস্থ বাস স্টপ ও WHO বিল্ডিংয়ের মধ্যবর্তী ১২ নং রেগুলেটরে বেশ বড় একটি ফাটল ধরে। এই নিকাশি ব্যবস্থা দিয়ে সাধারণভাবে মধ্য দিল্লি এলাকার জল যমুনায় গিয়ে পড়লেও এই মুহূর্তে ওই ফাটলের জন্য জলের গতিপথ পাল্টে যমুনার জল উল্টোদিকে প্রবাহিত হয়ে শহরে ঢুকে পড়ছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজে ওই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তাঁর পর্যবেক্ষণ, ওই ফাটল দিয়েই শহরে জল ঢুকছে। যার ফলে দিল্লির অন্যতম ব্যস্ত ওই অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার সারারাত প্রশাসনের ইঞ্জিনিয়ররা অনেক চেষ্টা করেও ওই ফাটল মেরামত করতে পারেননি।
মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল এই নিয়ে সরাসরি আঙুল তুলেছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের দিকে। আপ সুপ্রিমো জানিয়েছেন, “গতকাল রাতেই যদি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এখানে মোতায়েন করা হত, তাহলে হয়তো পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতো না।”
প্রসঙ্গত, এর আগে কেজরিওয়াল সরকার দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছে এনডিআরএফ ও সেনা মোতায়েনের জন্য আবেদন করে। যদিও এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দিকে আঙুল না তুলে সমস্যা সমাধানেই জোর দেওয়া উচিত বলে পাল্টা জানিয়েছেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর এস.কে সাক্সেনা।
শুক্রবার সকালেও টুইট করে কেজরিওয়াল লিখেছেন, “রিং রোডের নর্দমায় তৈরি হওয়া ফাটলের জন্যই আইটিও বিল্ডিং ও তাঁর সংলগ্ন অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। আমাদের ইঞ্জিনিয়ররা সারারাত কাজ করেছেন। আমি মুখ্যসচিবকে সেনা কিংবা এনডিআরএফ বাহিনীর সাহায্য নিতে বলেছি। যেকোনো পরিস্থিতিতে ওই ফাটল মেরামত করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।”
গত কয়েক দিন ধরেই প্রবল বৃষ্টিতে বিপদসীমা পেরিয়ে আরও অনেকটা উপর দিয়ে বইছে যমুনার জলস্তর। শুক্রবার সকালের তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে যমুনার জলস্তরের উচ্চতা ২০৮.৪০ মিটার। যার ফলে জলে ডুবে রয়েছে ঐতিহাসিক লালকেল্লা-সহ দেশের রাজধানী শহরের একাধিক এলাকা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন