তীব্র দহনজ্বালায় পুড়ছে রাজধানী। তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রির আশেপাশে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির বেশ কয়েকটি এলাকায় তীব্র জল সঙ্কট দেখা গিয়েছে। জল সঙ্কট মেটাতে পড়শি তিন রাজ্যের সাহায্য চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সরকার। চিঠি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্র সরকারের কাছেও।
দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে আবেদনে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং হিমাচল প্রদেশ থেকে বাড়তি জল চাওয়া হয়েছে। সরকারের বক্তব্য, গরমে দিল্লিতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে জলের চাহিদাও অনেক বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অন্য রাজ্য থেকে জলের জোগান না পেলে রাজধানী শহরের চাহিদা সামলানো যাবে না। আর দেশের রাজধানীর জলের চাহিদা মেটানো অন্য রাজ্যের কর্তব্য বলেও আদালতে দাবি করেছে দিল্লি সরকার।
সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করার পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের কাছে এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে দিল্লি সরকার। দিল্লির মন্ত্রী অতীশি কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, "দিল্লি তার প্রতিদিনের জলের চাহিদার জন্য যমুনা নদীর জলের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল৷ গত কয়েকদিন থেকে, হরিয়ানা জল ছেড়ে না দেওয়ায় ওয়াজিরাবাদ ব্যারেজে জলের স্তর মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে৷ যার ফলে জল সঙ্কট দেখা গিয়েছে।”
চাণক্যপুরীর সঞ্জয় ক্যাম্প এবং গীতা কলোনি এলাকা সহ দিল্লির বেশ কয়েকটি এলাকায় তীব্র জলের সঙ্কট দেখা গিয়েছে। প্রবল গরমে এক বাতলি জলের জন্য দীর্ঘ লাইন দিতে হচ্ছে মানুষকে। প্রশাসন থেকে যে জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। চাহিদা মিটছে না স্থানীয়দের। জমছে অসন্তোষ।
অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই দিল্লি সরকার জল অপচয় বন্ধ করার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জল অপচয় করলে দু’হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। বোর্ডের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কেউ জল অপচয় করলে তাঁকে ২০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। নোটিশ অনুযায়ী, কোনও বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক থেকে জল উপচে পড়লে, ব্যক্তিগত গাড়ি বা অন্যান্য যানবাহন ধুলে এবং নির্মাণ ও বাণিজ্যিক কারণে পানীয় জল ব্যবহার করলেই দিতে হবে জরিমানা। এই শাস্তি প্রয়োগ এবং নজরদারি চালাতে ২০০টি দল গঠন করা হয়েছে।
দিল্লির তাপমাত্রা আগামী কয়েকদিন একই রকম থাকবে বলেই জানিয়েছে মৌসম ভবন। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৫২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা দেশের সর্বকালের সর্বোচ্চ। মৌসম ভবন জানিয়েছিল, উত্তর-পশ্চিম দিল্লির মুঙ্গেশপুরের স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্রে বুধবার এই তাপমাত্রা পাওয়া গিয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন