শুধু ভারতই নয়, বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহরের তালিকায় একেবারে শীর্ষস্থানে রয়েছে রাজধানী নয়াদিল্লি। যদি এইভাবেই দেশের রাজশানী শহরের দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকে, তাহলে একজন সাধারণ দিল্লিবাসী তাঁর জীবনকাল থেকে প্রায় ১২টা বছর হারিয়ে ফেলবেন। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করল শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি অ্যান্ড পলিসি ইন্সটিটিউট। তাঁদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে ভারতের রাজধানী দিল্লিকে বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহরগুলির মধ্যে একটি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিবেশ দূষণ নিয়ে WHO বা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মাপকাঠি অনুযায়ী, প্রতি কিউবিক মিটার বাতাসে বার্ষিক PM2.5-এর মাত্রা কখনই ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হবে না। কিন্তু নয়াদিল্লির ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ ১২৬.৫ মাইক্রোগ্রাম ছাড়িয়েছে, যা WHO-এর নির্দিষ্ট করে দেওয়া মাপকাঠি থেকে প্রায় ২৫ গুণ বেশি। রিপোর্ট বলছে, ভারতের রাজধানী শহরে দূষণের পরিমাণ এভাবেই বাড়তে থাকলে শহরের বাসিন্দারা তাঁদের স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল থেকে ১১.৯ বছর কম বাঁচবেন।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি অ্যান্ড পলিসি ইন্সটিটিউটের Air Quality Life Index (AQLI) রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত পৃথিবীর অন্যতম দূষিত দেশগুলির মধ্যে একটি। এই দূষিত বাতাসের মধ্যে থাকার ফলে একজন সাধারণ ভারতবাসীর জীবনকাল থেকে গড়ে ৫.৩ বছর কমে যেতে পারে।
শুধুমাত্র দিল্লিই নয়, ওই রিপোর্টে দেশের অন্যতম দূষিত শহরগুলির মধ্যে রয়েছে গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ, লখনউ, কানপুর, পাটনা-সহ একাধিক শহর। ওই সমস্ত এলাকায়, বিশেষ করে বিহার, চণ্ডীগড়, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের জীবনকাল গড়ে ৯ বছর পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ভারতের ১৩০ কোটি মানুষ এমন এলাকায় বসবাস করেন যেখানকার বাতাসে দূষণের মাত্রা WHO-এর নির্দিষ্ট করে দেওয়া মাপকাঠিকে পেরিয়ে গিয়েছে। এমনকি দেশের ৬৭.৪ শতাংশ এমন জায়গায় থাকেন, যেখানকার বাতাসে দূষণের মাত্রা ভারতের নিজস্ব মাপকাঠি (প্রতি কিউবিক মিটারে ৪০ মাইক্রোগ্রাম PM2.5) পেরিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, ওই রিপোর্টে দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন