দিল্লির কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনার পর নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। শহরের অন্তত ১৩ টি কোচিং সেন্টার সিল করল দিল্লী পুরসভা। অভিযোগ, ওই সবকটি কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টগুলিকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
সোমবার দিল্লি পুরসভার মেয়র শেলী ওবেরয় কোচিং সেন্টারগুলি সিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, "এই কোচিং সেন্টারগুলি বেআইনিভাবে বেসমেন্ট ব্যবহার করছিল। এগুলি সিল করার জন্য কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।"
অন্যদিকে, পড়ুয়াদের মৃত্যুর ঘটনায় আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। বর্তমানে এই ঘটনায় ধৃৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সাত। জানা গেছে, ধৃতদের মধ্যে কোচিং সেন্টারের মালিক সহ একজন গাড়ি চালকও রয়েছেন। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে পরবর্তী জেল হেফাজতের জন্য।
এই বিষয়ে দিল্লি পুলিশের ডিসিপি সেন্ট্রাল এম হর্ষবর্ধন সর্বভারতীয় এক সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘দিল্লির ঘটনায় আমরা আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছি। তাঁদের মধ্যে চার জন ওই বেসমেন্টের মালিক। এ ছাড়া এক জন গাড়ির চালক রয়েছেন। তাঁকে ঘটনার আগে ওই এলাকা দিয়ে জমা জলের উপর জোরে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। যে কারণে বেসমেন্টের দরজা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং জল ঢুকতে শুরু করে।’’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘‘বেসমেন্টে কোনও রকম ব্যবসায়িক কাজের অনুমতি ছিল না। আমরা এ বিষয়ে দিল্লি পুরসভার কাছ থেকে আরও তথ্য চেয়েছি। সব তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের কাছে আমাদের অনুরোধ, এলাকায় শান্তি বজায় রাখুন এবং রাস্তা আটকে রাখবেন না। দোষীদের কড়া শাস্তি হবে, বিশ্বাস রাখুন।’’
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় গত রবিবার ওই কোচিং সেন্টারের মালিক এবং এক কো-অর্ডিনেটরকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। রবিবারই তাদের আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত দেয়।
উল্লেখ্য, একটানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন গোটা রাজধানী। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যায় রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে আচমকা হু হু করে বৃষ্টির জল ঢুকতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে জলে ভরে ওঠে বেসমেন্ট, যেখানে কোচিং সেন্টারের লাইব্রেরি ছিল। সেই সময় প্রায় ৩৫ জন পড়ুয়া ওখানে ছিলে। কয়েকজন দ্রুত বাইরে বেরিয়ে এলেও অনেকেই সেখানে আটকে পড়েন। তাঁদের দড়ির মাধ্যমে উপরে টেনে তুলতে হয়। তিন জন পড়ুয়া উঠতে পারেননি। পরে তাঁদের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতেরা হলেন তানিয়া সোনি (২৫), শ্রেয়া যাদব (২৫) এবং নবীন ডেলভিন (২৮)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন